হার্টবিট ডেস্ক
দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটে (আইভিআই) আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। এ উপলক্ষে সিউলে আইভিআইয়ের সদর দপ্তরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।এতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি, কোরিয়ায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ এবং আইভিআই সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা সরাসরি এবং অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন। শুক্রবার (১৬ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।
যোগদান অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম শুভেচ্ছামূলক ভিডিও বার্তা পাঠান। দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আইভিআইয়ের মহাপরিচালক ড. জেরম কিমসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দের উপস্থিতিতে আইভিআই সদর দফতরে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। এছাড়া ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির এবং আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ অনলাইনে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
আইভিআইয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টি চেয়ারম্যান জর্জ বিকারস্টাফ আইভিআই প্রতিষ্ঠা-চুক্তির প্রথম পর্যায়ের স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক সদস্য প্রাপ্তিতে বাংলাদেশকে স্বাগত জানান। তিনি তার বক্তব্যে নিরাপদ, কার্যকর ও সাশ্রয়ী মূল্যের ভ্যাকসিন আবিষ্কার, উন্নয়ন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে বিগত দুই দশক ধরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আইভিআইয়ের সহযোগিতামূলক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আইভিআইতে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভ জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে জরুরি চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহায়ক হবে এবং সহযোগিতার সম্পর্ককে আরো বিস্তৃত করবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও আইভিআইয়ের মধ্যকার সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে কলেরা, শিগেলা, অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল জাতীয় রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং বৈশ্বিক বাজারের জন্য স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশেই ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার বক্তব্যে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক সদস্যপদ প্রাপ্তিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সমর্থন প্রদানের জন্য আইভিআইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়া বাংলাদেশে ভ্যাকসিন গবেষণা ও উন্নয়ন, ভ্যাকসিন প্রযুক্তি হস্তান্তর, বাংলাদেশের গবেষক ও চিকিৎসকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদানের জন্য আইভিআইকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, আইভিআইয়ে বাংলাদেশের সদস্যপ্রাপ্তি জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সংক্রামক ব্যাধি হতে মুক্তি লাভে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আইভিআইয়ের সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশ রোগমুক্ত বিশ্ব নিশ্চিত করতে আইভিআইয়ের কর্মসূচীকে পূর্ণ সমর্থন দেবে।
আইভিআইয়ের মহাপরিচালক ড. জেরম কিম তার বক্তব্যে আইভিআই প্রতিষ্ঠা চুক্তিটি অনুসমর্থনের মাধ্যমে আইভির সদস্য দেশ হিসাবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি লাভে বাংলাদেশকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানান।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা চুক্তি স্বাক্ষর করে। অতঃপর বাংলাদেশ ২১ মার্চ ২০২১ সালে চুক্তিটি অনুসমর্থন করে। জাতিসংঘ ৫ এপ্রিল ২০২১ সালে চুক্তির অনুসমর্থন প্রাপ্তির প্রজ্ঞাপন জারি করে। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিটি ১ মে ২০২১ সাল থেকে কার্যকর হয়।আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটে যোগ দিল বাংলাদেশ
Discussion about this post