হার্টবিট ডেস্ক
চট্টগ্রামে অবস্থিত এভারকেয়ার হসপিটাল বিরল ও জটিল চিকিৎসা পদ্ধতি থোরাসিক এন্ডোভাস্কুলার এওর্টিক রিপেয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে, এওর্টিক এনিউরিজম রোগের চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন করলো । উল্লেখ্য যে, রাজধানী ছাড়া দেশের অন্য কোথাও এর আগে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়নি।
গতকাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে উক্ত রোগ ও চিকিৎসার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানান।
এওর্টা নামক মানবদেহের প্রধান রক্তনালীর চিকিৎসায় থোরাসিক এন্ডোভাস্কুলার এওর্টিক রিপেয়ার নামক এই চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে কাঁটাছেঁড়ার প্রয়োজন নেই বললেই চলে। এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর থোরাসিক সার্জারি এবং কার্ডিওভাস্কুলার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ ফজলে মারুফ-এর নেতৃত্বে এবং ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আশীষ দে ও অ্যানেস্থেশিয়া দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, সফলভাবে এই চিকিৎসা সম্পন্ন করে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম।
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর থোরাসিক সার্জারি এবং কার্ডিওভাস্কুলার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ ফজলে মারুফ বলেন, “এটি মূলত উপসর্গবিহীন একটি রোগ। ফলে এটি সাধারণ যেকোন রোগের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তবে রোগীর পেটে ও বুকে ব্যথা অনুভব হতে পারে এবং প্রেসার বেড়ে যেতে পারে। পেটের সিটি স্ক্যান, ইউএসজি অথবা এক্স-রে-এর মাধ্যমে এই রোগ সনাক্ত করা হয় এবং সনাক্তের পর চিকিৎসা করানো অতীব জরুরী।
সাধারণত সার্জারির মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। তবে বর্তমানে থোরাসিক এন্ডোভাস্কুলার এওর্টিক রিপেয়ার-এর মতো বিশেষ ও আধুনিক পদ্ধতিতে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়, যেই পদ্ধতি আমরা ব্যবহার করেছি।” তিনি আরও বলেন, “আপনারা ইতোমধ্যেই জেনেছেন যে এই পদ্ধতি রাজধানী ছাড়া দেশের অন্য কোথাও এর আগে ব্যবহৃত হয়নি এবং বাংলাদেশে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো সফলভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হলো।”
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আশীষ দে বলেন, “বিরলতম এই রোগের চিকিৎসায় এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর অভাবনীয় সাফল্যে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।
আমাদের শরীরের ধমনীর কোন অংশ অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকলে তাকে এওর্টিক এনিউরিজম বলা হয়। এওর্টিক এনিউরিজম-এর সাথে সাধারণত যাদের ডায়াবেটিস ও প্রেসার জনিত সমস্যা আছে তাদের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। তবে এটি জন্মগতও হতে পারে। এওর্টিক এনিউরিজম মোটেও অবহেলা করার মতো কোন রোগ নয় এবং সনাক্ত হলে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ এই রোগের ফলে ৩২-৬৮ শতাংশ রোগীর এনিউরিজম ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে যা রোগীর মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই আমি আহ্বান জানাই, আসুন আমরা নিজে এই রোগ সম্পর্কে সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করে তুলতে চেষ্টা করি।”
Discussion about this post