হার্টবিট ডেস্ক
বাংলাদেশে খাদ্যে উচ্চমাত্রার শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটের কারণে প্রতি পাঁচজন তরুণের মধ্যে একজন হৃদরোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। অবিলম্বে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা চূড়ান্ত করা না গেলে ট্রান্স ফ্যাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ট্রান্স ফ্যাটমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে যুব সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এ আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, ট্রান্স ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) বা ট্রান্সফ্যাট স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর একটি খাদ্য উপাদান। ডালডা বা বনস্পতি ঘি এবং এটি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার, ফাস্টফুড ও বেকারি পণ্যে ট্রান্সফ্যাট থাকে। এছাড়াও ভাজা-পোড়া খাবার তৈরিতে একই তেল বার বার ব্যবহার করলে ট্রান্সফ্যাট তৈরি হয়, যা হৃদরোগ ও হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়।
এতে আরও জানানো হয়, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষকরা ঢাকার ডালডা নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত ২ শতাংশ মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পেয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
ওয়েবিনারে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৬ হাজার মানুষ ট্রান্স ফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মারা যান, যার একটি অংশ তরুণ।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজের হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ‘খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১’ চূড়ান্তকরণে কাজ করছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ। তবে অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। এ প্রবিধানমালা দ্রুত চূড়ান্ত করতে হবে।
বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড নিউট্রেশন অ্যাসোসিয়েশনের (বাফনা) সাধারণ সম্পাদক বিপুল বিশ্বাস আপন বলেন, ট্রান্স ফ্যাটমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারলে হৃদরোগের প্রকোপ থেকে তরুণদের সুরক্ষা দেওয়া যাবে না।
তাই ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা ।
ওয়েবিনারে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ট্রান্সফ্যাট প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর ডা. শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুস সোবহান এবং প্রজ্ঞা’র ট্রান্স ফ্যাটবিষয়ক প্রকল্প সমন্বয়ক মাহমুদ আল ইসলাম শিহাব। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ নেওয়া তরুণদের সঙ্গে ওয়েবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. রুহুল কুদ্দুস (জিএইচএআই) ও এবিএম জুবায়েরসহ (প্রজ্ঞা) বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
Discussion about this post