হার্টবিট ডেস্ক
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকা ১৪ লাখেরও বেশি মানুষ রয়েছেন আশংকায়। কোভিশিল্ডের টিকার সংকট থাকায় এদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা স্বাস্থ্য অধিদফতর এখনও নিশ্চিত নয়। মিক্স এবং ম্যাচ পদ্ধতিতে টিকা অর্থাৎ প্রথম ডোজ এক কোম্পানির এবং পরের ডোজ আরেক কোম্পানির দেওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সরকারের টিকাবিষয়ক ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল এক্সপার্ট গ্রুপ বা নাইটেগ-এর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে অধিফতর।
দেশে সংক্রমণের এই বিপদজনক পরিস্থিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত সংক্রমণের মধ্য দিয়ে পুরো দুনিয়া একটি বিপজ্জনক সময় পার করছে। সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আধানোম গেব্রেয়াসুস জানিয়েছেন, করোনার অতি সংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্টটি এরইমধ্যে বিশ্বের শ’খানেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ডব্লিউএইচও প্রধান বলেছেন, ডেল্টার মতো আরও সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টগুলো দ্রুত অনেক দেশে প্রভাবশালী স্ট্রেইন হয়ে উঠছে। আমরা এই মহামারির খুব বিপজ্জনক একটি সময়ে রয়েছি।
,বিপজ্জনক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে,-যোগ করেন টেড্রোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।
আর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে অন্যতম পন্থা টিকা নেওয়া। দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি করা কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। সেরামের সঙ্গে তিন কোটি ডোজের চুক্তি থাকলেও সেখান থেকে দেশে এসেছে মাত্র ৭০ লাখ। ভারত টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় এই টিকা নিয়ে সংকটে পড়েছে দেশ।
কেনা ৭০ লাখ ডোজের সঙ্গে ভারত সরকারের উপহার দেওয়াসহ দেশে কোভিশিল্ডের মোট টিকা এসেছে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ। সাত ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে এখন পর্যন্ত কোভিশিল্ড টিকা দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৭৯ জনকে। সে হিসাবে এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেতে অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় ১৪ লাখের বেশি মানুষ।
এই বিপুল সংখ্যক মানুষ যেমন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা সংকটে দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন, তেমনি দেশে ফাইজার, মডার্না ও সিনোফার্মের টিকা পৌঁছানোর খবরে আশান্বিত হয়েছেন। তারা ভাবছেন হয়তো তারা দ্বিতীয় ডোজ অন্য কোম্পানির নিতে পারবেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক রোবেদ আমিন গত ২৬ জুন বলেন, সারা পৃথিবীতেই মিক্স এবং ম্যাচ পদ্ধতিতে টিকা অর্থাৎ প্রথম ডোজ এক কোম্পানির এবং পরের ডোজ আরেক কোম্পানির দেওয়া হচ্ছে। হয়তো ভবিষ্যতে আমরা এই পদ্ধতিতে এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
যদিও অধিদফতর বলছে, তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অপেক্ষা করছে নাইটেগের সিদ্ধান্তের। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, তারা (নাইটেগ) এখনও সিদ্ধান্ত দেয়নি। আর সিদ্ধান্ত না দিলেতো আলটিমেটলি টিকা দেওয়া যাচ্ছে না। …তবে (সিদ্ধান্ত) দেবে নিশ্চয়ই। আর যেহেতু বিভিন্ন জায়গা থেকে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট পাওয়া গেছে, তারা নিশ্চয়ই এ সম্পর্কে একটা সিদ্ধান্ত দেবেন আমাদের।
তবে ব্যক্তিগতভাবে অধ্যাপক রোবেদ আমিন মনে করেন, টিকার মিক্স ডোজ দেওয়া যাবে। তার ভাষ্য, যে টিকাই পাওয়া যাচ্ছে, সেটাই দিয়ে দেওয়া উচিত- ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি। আগে যে টিকাই দেওয়া হোক, এখন অ্যাভেইলেবেল যেটা রয়েছে সেটাই দিয়ে দেওয়া যাবে, সেটা ফাইজার হোক, মডার্নার হোক বা সিনোফার্মের।
এদিকে, নাইটেগের সদস্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ মনে করেন, এই মুহূর্তে দুই কোম্পানির দুই ডোজ দেওয়া যাবে না।যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজও এ টিকাই নিতে হবে।
Discussion about this post