হার্টবিট ডেস্ক
দেশের সীমান্তবর্তী ১৩ জেলায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবার কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব জেলায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলায় মানুষের জীবন নিরাপদ করার লক্ষ্যে এমন প্রস্তাব করছে সংস্থাটি। অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় এরই মধ্যে মঙ্গলবার (১৫ জুন) থেকে দিনাজপুরে স্থানীয়ভাবে ঘোষিত লকডাউন কার্যকর হবে।
সূত্র মতো, সম্প্রতি অধিদপ্তরের একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দল সীমান্তবর্তী জেলা পরিদর্শন করে। সেখান থেকে ফেরার পর তাদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এসব জেলায় লকডাউনের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয় অধিদপ্তর।
এ লক্ষ্যে তারা একটি প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে, যা আজ-কালের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, দেশের উচ্চ সংক্রমণশীল এসব জেলা থেকে সারা দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়া রোধ করতে জেলাগুলোকে ৩টি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। সে লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে এসব অঞ্চলে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছে অধিদপ্তর।
জেলাগুলোর হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীর জন্য নির্ধারিত শয্যা ও আইসিইউ শয্যাগুলো পরিপূর্ণ।
সূত্র জানায়, প্রথম ক্লাস্টারে রয়েছে চারটি জেলা-কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর। এ চারটি জেলায় সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের বেশি।
দ্বিতীয় ক্লাস্টারে থাকা চারটি জেলা হলো: চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও নওগাঁ। এই জেলাগুলোয় শনাক্তের হার ১০ শতাংশের উপরে।
এ ছাড়া শনাক্তের হার ৫ থেকে ১০ শতাংশের ঘরে থাকা তৃতীয় ক্লাস্টারের ৫টি জেলা হলো সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা ও পিরোজপুর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুসারে মে মাসের শুরু থেকে মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা নিম্নগামী ছিল। তবে ঈদ-উল-ফিতরের পর থেকে এ পর্যন্ত এই হার ক্রমেই বাড়ছে। গত ৭ দিন পরীক্ষা হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৬৬।
এই সময়ে আগের ৭ দিনের চেয়ে ১০ হাজার ৪৪০টি পরীক্ষা বেশি হয়েছে। এই সাত দিনে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ১৯৩ জন, যার আগের ৭ দিনের তুলনায় ৪ হাজার ১৯৮ জন বেশি। এমনকি এই ৭ দিনে মৃত্যু হয়েছে ২৭০ জনের, যা আগের ৭ দিনের তুলনায় ২৬ জন বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, দ্রুত অধিক সংক্রমণশীল জেলাগুলোয় কঠোর লকডাউন দিতে হবে। পাশাপাশি এসব জেলা থেকে যেন সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
দিনাজপুর সদরে কাল থেকে ৭ দিনের লকডাউন
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনাজপুর সদর উপজেলায় মঙ্গলবার সকাল থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে দিনাজপুর জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটি।
এ উপজেলায় সংক্রমণের হার ৭৫ শতাংশে পৌঁছে যাওয়ায় কমিটির জারুরি সভায় রোববার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২১ জুন পর্যন্ত লকডাউন চলাকালে সদর উপজেলার কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না।
মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, কার, মাইক্রোবাসসহ সব রকমের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ওষুধ ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বন্ধ থাকবে সব দোকান।
এ অবস্থায় এক সপ্তাহের লকডাউন ছাড়া কোনো উপায় নেই। তিনি লকডাউন কঠোরভাবে পালন করতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
Discussion about this post