হার্টবিট ডেস্ক
ধাক্কা লেগে কালশিটে পড়ে যাওয়া, হঠাৎ পায়ে গরম পানি পড়ে ফোসকা বা আচমকা পা মুচকে যাওয়া; এমন ছোট আঘাতে অনেক সময় দীর্ঘদিন ব্যথা থাকে। মূলত প্রাথমিক চিকিৎসা না করানো কিংবা অবহেলার কারণে এমনটি হয়। ছোট আঘাতের পর জরুরি ফাস্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলে দ্রুত ব্যথা চলে যায়।
আজকের আয়োজনে থাকছে কিছু ছোট আঘাতের প্রাথমিক চিকিৎসার নিয়ম।
নাক থেকে রক্ত পড়া: নাক থেকে রক্ত পড়লে মাথা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে মাঝখানে হাড় ও তরুণাস্থির সংযোগস্থল ৫-১৫ মিনিট চেপে ধরুন। এই অংশ বরফ চেপে ধরলেও উপকার পাবেন।
মাথা পিছনের দিকে হেলাবেন না। এতে গলা দিয়ে রক্ত নেমে ফুসফুসে চলে যেতে পারে। ২০ মিনিট পরও রক্ত বন্ধ না হলে এবং মাথায় যন্ত্রণা ও দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মচকে যাওয়া: হঠাৎ পা মচকে গেলে প্রথম দিন ২০ মিনিট অন্তর অন্তর বরফ লাগান। কোনো ইলাসটিক ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে রাখলে বা উপরের দিকে পা তুলে রাখলেও উপকার পাবেন। ২৪ ঘণ্টা পর আস্তে আস্তে গরম সেঁক দিন; এতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দমবন্ধ হয়ে যাওয়া: যদি গলায় কিছু আটকে দমবন্ধ হয়ে গেলে রোগীর মাথা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে কাঁধের দুই হাড়ের মাঝে হাত দিয়ে ৫ বার চাপ দিন। এতে কাজ না হলে পেছন থেকে নাভির নিচে এক হাতের দিয়ে চেপে ধরে অন্য হাতের কব্জি দিয়ে উপর দিকে চাপ দিন।
বিষক্রিয়া: বিষক্রিয়ার ফলে কেউ অজ্ঞান হলে বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোনোভাবেই বমি করানোর চেষ্টা করবেন না। এতে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। ওই সময় কিছু খেতে বা পান করতে দেওয়া উচিৎ না।
পোড়ে যাওয়া: ছোটখাট পোড়ার ক্ষেত্রে প্রথম ওষুধ টুথপেস্ট; পোড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পোড়াস্থানে টুথপেস্ট লাগিয়ে দিন। এর কিছুক্ষণ পর পোড়ে যাওয়া স্থান ঠাণ্ডা পানির নিচে ধরে থাকুন। তারপর হালকা ব্যান্ডেজ বেঁধে নিন। চাপ দিয়ে বাঁধবেন না। বেশি গভীর পোড়ার ক্ষেত্রে বরফ লাগাবেন না; ফোসকা পড়তে পারে। কোনো পোড়াতেই অ্যান্টিবায়োটিক বা মাখন লাগাবেন না; এতে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে।
কুকুরের কামড়: কুকুর কামড়ালে প্রথমে চাপ দিয়ে রক্ত চলাচল বন্ধের চেষ্টা করুন। এরপর সাবান মেশানো গরম পানি দিয়ে ক্ষতস্থান ধুয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম দিয়ে স্টেরাইল ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিন। আর যতদ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
কালশিটে: জোরে আচমকা আঘাত লেগে কালশিটে পড়ে গেলে ২৪-৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কিছুক্ষণ পর পর বরফ লাগাতে থাকুন। একটা-দুটো পেনকিলার খেতে পারেন। কিন্তু ব্যাথা না কমলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান।
ডায়রিয়া: এই সমস্যায় ডিহাইড্রেশন কমানো উচিত। তাই প্রথমেই প্রচুর পানি ও ফ্রুট জুস খেতে হবে। দুধ ও কফি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রচুর বিশ্রাম নিন ও কলা, ভাত, আপেল, টোস্ট জাতীয় খাবার খান।
চোখ জ্বালা করলে: যদি কোনো রাসায়নিক দ্রব্যের কারণে চোখ জ্বালা করে তাহলে কচলাবেন না। চোখে যতটা পারেন ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিন। যদি কোনো আঘাত লেগে থাকে তাহলে ঠাণ্ডা সেঁক দিন কিন্তু বেশি চাপ দেবেন না চোখে। যদি রক্ত পড়ে বা দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায় তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যান। চোখে কিছু ঢুকলে উপরের পাতা টেনে নীচে ধরে থাকুন।
Discussion about this post