করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ডেউয়ে সংক্রমণের হার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। টানা দুই সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু এবং সংক্রমণ ছাড়িয়ে যাচ্ছে পূর্বের সকল রেকর্ড। এর মধ্যে রয়েছেন করোনার সম্মুখযোদ্ধা চিকিৎসকসহ বহু স্বাস্থ্যকর্মী।
প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোনও না কোনও চিকিৎসক মারা যাচ্ছেন। গেল তিন দিনে সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন আরও ছয়জন চিকিৎসকের নাম।
এরমধ্যে আজ শনিবার (১০ এপ্রিল) মারা গিয়েছেন দুইজন চিকিৎসক। তাদের মধ্যে একজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. গাজী সাইফুল আলম চৌধুরী। শনিবার রাত দেড়টার দিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন)।
অন্যজন হলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোজাদ্দেদ মেহেদী। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।
গতকাল ৯ এপ্রিল (শুক্রবার) প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে দুইজন চিকিৎসক পরলোক গমন করেছেন। তাদের মধ্যে একজন গরিবের চিকিৎসক খ্যাত আব্দুল লতিফ। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) থেকে স্বাস্থ্য সেবার সনদ গ্রহণ করা ডা. আব্দুল লতিফ ছিলেন চমেক ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার দক্ষিণ পাড় এলাকার শিকলবাহায়। ডা. আব্দুল লতিফ প্রেসার ও ডায়াবেটিস ভুগছিলেন। এ ছাড়াও তাঁর একবার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল।
সম্প্রতি ডা. আব্দুল লতিফের করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে নিজের গড়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
চিকিৎসায় তাঁর শারীরিক অবস্থার বেশ উন্নতি হয়েছিল। অবস্থা অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় তাঁর হাই-ফ্লো অক্সিজেনের নলও সরিয়ে নেন চিকিৎসকরা। এরই মধ্যে সবাইকে কাঁদিয়ে আজ শুক্রবার না ফেরার দেশে চলে গেলেন সদা হাস্যোজ্জ্বল এ মানুষটি।
গতকাল মারা যাওয়া অন্য চিকিৎসক হলেন, চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. মোহাম্মদ মুনীর। শুক্রবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন তিনি।
গত ৮ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দুইজন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. ওবায়দুল্লাহ। বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় মারা যান তিনি। অধ্যাপক ডা. ওবায়দুল্লাহ রামেকের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এদিন মারা যাওয়া আরেকজন হলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. মো. শওকত আলী। বৃহস্পতিবার প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
Discussion about this post