হার্টবিট ডেস্ক
একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে যাওয়া রুহুল আমিন বেশকিছু দিন ধরে ভুগছেন মেরুদেণ্ডের সমস্যায়। চিকিৎসকের শরাণাপন্ন হলে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় পর জানতে পারলেন, তিনি ভুগছেন ‘নিউরো স্পাইন’সমস্যায়।
সমস্যা সমাধানে সার্জারির পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকও। স্বজনদের পরামর্শে দেশে বাইরে সার্জারি করাতে চান তিনি । ফলে রুহুল আমিনের প্রাথমিক চিকিৎসা মিলেছে ঠিকই। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন জটিলতায় এখনই সম্পূর্ণ চিকিৎসা পাননি তিনি।
শুধু রুহুল আমিন নন, নিউরো স্পাইন সমস্যায় ভুগতে থাকা এমন অনেকেই বাংলাদেশে করাতে চান না এর চিকিৎসা। চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমানে নিউরো সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের চিকিৎসা বাংলাদেশে করতে সক্ষম। তবে দক্ষ লোকবল কম থাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে এ বিভাগ খোলা যাচ্ছে না। ফলে রোগীদের গুনগত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
নিউরো স্পাইন সোসাইটি অফ বাংলাদেশের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, নিউরো সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ রোগী মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়া, জন্মগত সমস্যা নিয়ে আসেন প্রায় ১৫ শতাংশ রোগী, দুর্ঘটনা জনিত কারণে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ এবং ঘাড় বা বিভিন্ন নিউরো সমস্যা নিয়ে আসেন আরও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ রোগী।
চিকিৎসা থাকলেও রোগীরা সচেতন না হওয়ায় দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে ছুটছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের নিউরো সার্জন অধ্যাপক ডা. আনিসুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, মেরুদণ্ডে কোনো সমস্যা হলে তার প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। আর এ সমস্যার চিকিৎসা বেশ জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু মেরুদণ্ডের ছোট সমস্যা নিয়েও সাধারণ মানুষ বিদেশ পাড়ি দিচ্ছেন। তবে বাংলাদেশেও এখন মেরুদণ্ডের শতভাগ চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তথ্যানুযায়ী, সার্জারি বিভাগে ৪৫টি বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি থাকে ২১৫ থেকে ২২০ জন। বিভাগটিতে পাঁচজন অধ্যাপকের মধ্যে চারটি পদই খালি, পাঁচ সহযোগী অধ্যাপক পদের একজনও নেই। সাত সহকারী অধ্যাপকের মধ্যে রয়েছে মাত্র তিনজন। তারপরেও রোগীদের রাত-দিন সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালেই নিয়মিত সার্জারি করা হচ্ছে।
চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে আলাদা নিউরো স্পাইন বিভাগ চালুর সরকারি অনুমোদন পাওয়া গেছে। বিভাগটি চালু প্রক্রিয়াধীন।
তিনি বলেন, চমেক হাসপাতালে ৪৫ জনের বেডে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। চিকিৎসকদের সক্ষমতা ও আন্তরিকতার অভাব নেই। চমেক হাসপাতালের পাশাপাশি চট্টগ্রামে পাঁচ থেকে ছয়টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। ওই মেডিক্যাল কলেজগুলোতে নিউরো সার্জারি বিভাগ খোলা হলে মানুষের চিকিৎসা সেবার পরিধি অনেক বেড়ে যেতো।
Discussion about this post