অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
১২ নভেম্বর বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়েছে বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস। ‘বন্ধ হোক নিউমোনিয়া, প্রতিটি নিঃশ্বাসের আছে দাম’- এই শ্লোগান সামনে রেখে পালিত হচ্ছে এই দিবস। শিশু থেকে পূর্ণ বয়স্ক সবার একটি একক বৃহৎ সংক্রামক রোগে এত মৃত্যু হ্রাস করার সর্বব্যাপী আয়োজন আর উদ্যোগের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে।
২০১৯ সালে নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ লাখ মানুষের, এর মধ্যে ৭ লাখই শিশু। সে সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কোভিডের চাপ আর এতে নিউমোনিয়াতে মৃত্যু ঝুঁকিও বেড়েছে। ২০২১ সালে শ্বাসযন্ত্রের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন ৬০ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে বেশিরভাগ ছিলেন খুব কমবয়সী আর খুব বেশি বয়সী মানুষ।যেসব অঞ্চলে টিকার সুযোগ কম, খাদ্য ঘাটতির জন্য অপুষ্টি ঘিরে ধরে সমাজকে, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, ধোঁয়া আর রান্নার জ্বালানি দূষিত করে বাতাস, সেখানকার শিশুরাও আছে ঝুঁকিতে।
ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে যে প্রদাহ হয় তাকেই বলে নিউমোনিয়া। সিংহভাগ সংক্রমণের কারণ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ।
ধূমপায়ী, মাদকসেবীদের মধ্যে বেশি হয় নিউমোনিয়া। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুরাও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। বায়ু দূষণ, ঘরের ভেতর বায়ু চলাচল বিঘ্নিত হলে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল, যারা অনেক দিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ নিচ্ছেন তাদেরও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি।
নিউমোনিয়া হলে হয় খুব জ্বর আসে, কাঁপুনির মতো লক্ষণ থাকে। কফ, কাশ থাকতে পারে। শ্বাস কষ্ট ও বুক ব্যথা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তার দেখানো জরুরি।
রক্তের সিবিসি আর বুকের এক্স রে আর উপসর্গ আর পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় সহজ। প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন ত্বরিত চিকিৎসা। এন্টিবায়োটিক ও অক্সিজেন গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
সময়মতো নিউমোনিয়ার টিকা নিতে হবে বিশেষ করে যা উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন। টিকা নিউমোনিয়া প্রতিরোধে বেশ কার্যকর। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। ধূমপান, মদ্যপান বর্জন করতে হবে। ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। শহরের বায়ু দূষণ রোধ জরুরি। আর ঘরে যাতে প্রচুর আলো বাতাস চলাচল করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
Discussion about this post