হার্টবিট ডেস্ক
রাজধানীতে ৫০০ শিশুর রক্ত পরীক্ষায় সবার শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে; আইসিডিডিআর‘বির করা এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
আজ মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন গবেষকরা।
ইউনিসেফের উদ্যোগে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসিআর এবং আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
আইডিসিআর সম্প্রতি দেশের চার জেলার ৯৮০ শিশুর উপর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে। জেলা চারটি টাঙ্গাইল, খুলনা, সিলেট ও পটুয়াখালী।
এতে দেখা গেছে, ৬৫ শতাংশ শিশুরই রক্তে সিসার মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নির্ধারিত মাত্রা থেকে ৩ দশমিক ৫ মাইক্রো গ্রাম বেশি। এর মধ্যে ২৪-৪৮ মাস বয়সী শিশুদের শতভাগের শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
গবেষকরা বলছেন, বড়দের তুলনায় শিশুদের রক্তে সিসার প্রভাব বেশি। এজন্য শিশুদের সারা জীবনের জন্য স্নায়ুবিক, মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে। মস্তিষ্ক আক্রান্ত হচ্ছে, স্মরণশক্তি কমছে, অনেক ক্ষেত্রে কোমায়ও চলে যাচ্ছে শিশুরা।
এ ছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারের ৩৬৭টি পণ্যের মধ্যে ৯৬টি পণ্যে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। চারটি শহরে স্থানীয়ভাবে তৈরি খেলনা, রং, অ্যালুমিনিয়াম ও সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, সবজি, চাল এবং মসলার নমুনায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায়। শহর চারটি ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী ও খুলনা। এ ছাড়া মাটি, ছাই, পোড়া মাটি ও হলুদের গুঁড়ায় সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে।
আইডিসিআরের গবেষক নওরোজ আফরিন গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন, দেশে সাড়ে তিন কোটি শিশু সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত। লিড অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং, টার্মারিক ও রং কারখানা এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য পেন্সিল, কালি, খেলনা বা গহনাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে ব্যবহৃত সিসা থেকে ছড়াচ্ছে এ বিষক্রিয়া।
তিনি বলেন, ছোটবেলায় সিসার প্রভাব বুদ্ধিমত্তা কমায়, মনোযোগের ঘাটতি তৈরি করে, লেখাপড়ায় দুর্বল হয়, যা ভবিষ্যতে অনেক আগ্রাসী করে তোলে।
সেমনিারে গবেষকরা বলেন, পল্লী এলাকায় পরীক্ষা করা ৩০ শতাংশ গর্ভবতী নারীর শরীরে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সিসা দ্বারা দূষিত হলুদের গুঁড়া গর্ভবতী নারীর শরীরে উচ্চ মাত্রার সিসার উপস্থিতির কারণ।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো.শাহাব উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুজ্জামান, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট প্রমুখ।
Discussion about this post