ফারুক ভূঁইয়া রবিন
প্রথম ঢেউয়ের চূড়ার সময়কেও যেন ছাপিয়ে যাচ্ছে কোভিড সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি। দেশে প্রথমবারের মতো গত ৭ দিনে গড় আক্রান্ত ৪ হাজারের বেশি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে আগামী এক সপ্তাহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সতর্ক না হলে সামনে অপেক্ষা করছে ভয়াবহ কিছু। সংক্রমণের লাগাম টানতে রোগী শনাক্তে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। প্রয়োজনে আরো কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত আইইডিসিআরের।
দেশে কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে ক্ষিপ্রগতিতে। বর্তমান পরিস্থিতি ছাড়িয়ে গেছে আক্রান্ত শনাক্তের আগের সব চিত্র।
কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে সংক্রমণ চূড়া ছিল গত বছরের জুন-জুলাই মাস। প্রথম ঢেউয়ে রোগী শনাক্তে ৭ দিনের সর্বোচ্চ গড় ছিল গত ২ জুলাই, ৩ হাজার ৮১১ জন। তবে এবার ছাড়িয়ে গেছে আগের সব রেকর্ড। সবশেষ ৭ দিনের গড় শনাক্ত এখন ৪ হাজার ৯।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করেন, প্রথম ঢেউয়ের চূড়ার সময়ের তুলনায় বর্তমানে পরীক্ষা হচ্ছে দেড়গুণ বেশি হারে। এতে আক্রান্তও হচ্ছে বেশি। তবে শঙ্কার বিষয় হলো লাফিয়ে বাড়ছে শনাক্তের হারও। মঙ্গলবার প্রতি ১০০ জনে আক্রান্ত শনাক্ত হন ১৯ জন। সম্ভাব্য সব ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কঠোরভাবে না নিলে আগামীতে পরিস্থিতি আরো অবনতির শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
বিএসএমএমইউয়ের ভাইরোলজিস্ট ও সাবেক উপাচার্য ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, দ্রুত রোগী শনাক্ত করে তাদের আইসোলেট করা এবং যে বাড়িতে থেকে রোগী শনাক্ত হচ্ছে সেই বাড়িটি হোম কোয়ারেন্টাইন করে আমরা যদি কাজ করি তাহলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, এবার করোনার ধরন অনবরত পরিবর্তন হচ্ছে, ভাইরাসের ট্রান্সমিশন বেড়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এখনই যদি এটাকে টেনে নামানো না যায় তাহলে আমরা সবাই আসলে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাব।
সংক্রমণের লাগাম টানতে সরকার যে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, তা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সক্ষমতাও প্রমাণ করতে হবে। আর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে আরো কঠোর সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দিচ্ছে আইইডিসিআর।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, দুই সপ্তাহ দেখে জনস্বার্থে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয় কোনো কঠোর অবস্থানে যেতে হয় আশা করি বাংলাদেশ সরকার সেই সব পদক্ষেপ নেবে।
বিএসএমএমইউয়ের ভাইরোলজিস্ট ও সাবেক উপাচার্য ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা যে নির্দেশ দেই সেই নির্দেশনা প্রতিফলিত হচ্ছে কিনা সেটার দিকে আমরা খুব বেশি নজর দেই না।
ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ দিন দিন চাপ বাড়াচ্ছে হাসপাতালগুলোতেও তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। courtesy- samoynews tv
Discussion about this post