ডাঃ এন এম সাইফ উদ্দীন নিজামী (নয়ন )
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য) এমএস (ইউরোলোজী) ,ইউরোলোজিস্ট, এন্ড্রোলোজিস্ট ও এন্ডোল্যাপারস্কপিক সার্জন
প্রোস্টেট ক্যান্সার কি?
প্রোস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সারকেই প্রোস্টেট ক্যান্সার বলে।
প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন কারা?
> ৪০ বছরের নিচে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি কম। তবুও এই সম্ভাবনা প্রতি ১০,০০০ জনে ১ জন।> ৪০-৫৯ বছরে প্রতি ১০৩ জনে ১ জন।> ৬০-৭৯ বছরে প্রতি ৮ জনে ১ জন।
প্রোস্টেট ক্যান্সার কেন হয়?
প্রকৃত কারন এখনো অজানা। তবে নিম্নের কারণগুলো দায়ী বলে অনেকটা প্রমানিত।
১) বয়সের কারনেই সাধারণত প্রোস্টেট ক্যান্সার হয়।
২) বংশগত কারনেও অনেক সময় এই ক্যান্সার হয়ে থাকে।
৩) জাতিগত কারনেও এই ক্যান্সার হয়ে থাকে।
৪) অস্বাভাবিক হারে প্রোস্টেট গ্রন্থি বেড়ে গেলে এবং দীর্ঘদিন কোন ট্রিটমেন্ট নেয়া না হলে সেখানে ক্যান্সার হয়ে যেতে পারে।
অন্যান্য কারনঃ
১) ডায়েটঃ যেসব পুরুষরা অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খান তাদের এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
২) এনড্রোজেন লেভেলঃ শরীরের অভ্যন্তরে এনড্রোজেন মাত্রার তারতম্য এর কারনেও এই ক্যান্সার হতে পারে।
প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণঃ
১) প্রসাব করতে বিভিন্ন অসুবিধা হওয়া, প্রসাব ধরে রাখতে অসুবিধা হওয়া, প্রসাব পুরোপুরি বের না হওয়া, ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
২) মূত্রাশয়ে প্রসাব জমে থাকে এবং পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা হয়ে থাকে।
৩) প্রোস্টেট ক্যান্সার থেকে অনেক সময় বোন মেটাস্টাসিস হয়ে যায় সে কারনে লক্ষণ হিসেবে নার্ভের দুর্বলতা ও হাড়ের ফ্রাকচার ও দেখা দিয়ে থাকে।
প্রোস্টেট ক্যান্সার শনাক্তকরণ পদ্ধতিঃ
১) শাররীক পরীক্ষা (DRE- ডিজিটাল রেক্টাল এক্সামিনেশন)
২) ল্যাবরেটরী পরীক্ষা> প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন পরীক্ষা> সিরাম এসিড ফসফাটেইজ > এলকালাইন ফসফাটেইজ
৩)ইমেজিং> আল্ট্রাসনোগ্রাফি> সিটি স্ক্যান> এম.আর.আই
৪) বায়োপ্সি পরীক্ষা> প্রোস্টেট বায়োপ্সি পরীক্ষা (ইমেজিং গাইডেড)
প্রোস্টেট ক্যান্সার কোথায় ছড়ায়?
প্রধানত প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের চারপাশ, লসিকা গ্রন্থি এবং হাড়ে ছড়ায় (পেল্ভিস, ভারট্যাবরা, পাঁজর, ফিমারস, ক্ল্যাভিকেল, স্কাল্প ইত্যাদি)। প্রোস্টেট ক্যান্সারও অন্য ক্যান্সারগুলোর মত আস্তে আস্তে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
চিকিৎসাঃ
ক্যান্সারের ধরন, প্রকৃতি ও অবস্থান এর উপর চিকিৎসা নির্ভর করে।
১) সার্জারি
২) রেডিওথেরাপী
৩) কেমোথেরাপী
৪) অন্যান্য থেরাপী
প্রোস্টেট ক্যান্সার রোগীর যত্নঃ
১) রোগীর সাথে সব সময় ভাল ব্যবহার করতে হবে, তাকে হাসি খুশি রাখতে হবে।
২) সহজে হজম হয় এমন সব পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।পরিমিত পানি পান করতে হবে এবং তেল ও মশলা জাতীয় খাবার কম খাওয়াতে হবে। আঁশ যুক্ত খাবার খেতে হবে যাতে নিয়মিত পায়খানা হয়।
৩) এছাড়াও সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম এবং পরিপূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন।
৪) নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখবেন এবং ফলোআপ করবেন।
লেখক: ইউরোলোজিস্ট, এন্ড্রোলোজিস্ট ও এন্ডোল্যাপারস্কপিক সার্জন, কিডনী, প্রস্টেটগ্ল্যান্ড, মূত্রথলী, মূত্রনালী,পুং প্রজননতন্ত্র এবং ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
চেম্বার: এপিক হেলথ কেয়ার, চট্টগ্রাম। রুম নং- ৪০৩ ফোন: ০১৮৪৭-০০৫৩৪৫-৪৬
Discussion about this post