উম্মে শায়লা রুমকী
শরীরে ব্যথা হলে আমরা ব্যথানাশক সেবনের আগে গরম সেঁক দিই। এটা খুবই প্রচলিত। ধারণা করা হয়, ব্যথার স্থানে গরম সেঁক দিলে ব্যথা কমে। তবে গরম সেঁকের কিছু রকম রয়েছে। কোন ব্যথায় কেমন গরম সেঁক দিতে হবে, তা জেনে রাখা খুবই দরকার।
দীর্ঘমেয়াদি কোমরব্যথা, বাতের ব্যথা হলে গরম সেঁক বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। গরম সেঁক মাংসপেশির ব্যথা ও জয়েন্টের জড়তা দূর করে।
ব্যথায় আক্রান্ত মাংসপেশিতে গরম সেঁক দেওয়া হলে রক্তের নালিকাগুলো প্রসারিত হয়। ফলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। রক্ত চলাচল বেড়ে যাওয়ার ফলে আক্রান্ত
মাংসপেশিতে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টির সরবরাহ বেড়ে যায়। সুষ্ঠুভাবে রক্ত চলাচল হয় বলে মাংসপেশিতে আরামবোধ হয়।
গরম সেঁক দেওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। সেগুলো জেনে রাখলে আসন্ন শীতে ব্যথায় সেঁক দেওয়ার কাজটি করতে পারবেন ঠিকমতো।
গরম পানির সেঁক
হট ওয়াটার ব্যাগে গরম পানি ভরে সেঁক দিতে পারেন। তবে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে ব্যাগ ফেটে বা অসাবধানতায় কর্ক খুলে দুর্ঘটনা হতে পারে। ১৫-২০ মিনিট সেঁক দিতে পারেন।
গরম পানিতে স্নান
দিনের শুরুতে গরম পানিতে লম্বা সময় ধরে স্নান করা জরুরি। এতে সকালের হাড়ের জোড়ার জড়তা দূর হয়। পানির তাপমাত্রা ৯২-১০০ ডিগ্রি হওয়া উচিত। যাঁদের হৃদ্রোগ আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার না করাই ভালো। যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন বা হাঁটতে বের হন, তাঁরা ব্যায়ামের আগে গরম পানিতে স্নান করতে পারেন। এতে জয়েন্ট ও মাংসপেশি শিথিল হবে এবং ব্যায়ামের ফলে আঘাতের ঝুঁকি কমে যাবে।
গরম পানিতে ব্যায়াম
যাঁরা বাত রোগে ভুগছেন, তাঁরা গরম পানিতে সাঁতার কাটতে পারেন ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী থেরাপিউটিক ব্যায়াম করতে পারেন।
লবণ সেঁক
কান, দাঁতের মাড়িতে ব্যথা হলে লবণ গরম করে একটা কাপড়ে পুঁটলি বানিয়ে সেঁক দেওয়া যেতে পারে। দীর্ঘদিনের ব্যথায় গরম সেঁক কাজ করে। তবে যেকোনো সেঁক দেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
লেখক: ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট, পিটিআরসি ফিজিওথেরাপি সেন্টার
Discussion about this post