হার্টবিট ডেস্ক
নাইট্রিক অক্সাইড নাসাল স্প্রে (এনওএনএস) প্রয়োগে করোনায় আক্রান্ত রোগীর শরীরে ভাইরাসের মাত্রা প্রায় পুরোটাই কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, এনওএনএস প্রয়োগের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৯৪ শতাংশ এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৯৯ শতাংশ ভাইরাসের মাত্রা কমে যায়। ভারতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ওপর এ গবেষণা করা হয়। ওষুধের তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের ফলাফল অনুসারে স্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভি
এনওএনএস নিয়ে গবেষণাটি করেছে ভারতের মুম্বাইভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লেনমার্ক। রোগীর নাকের মাধ্যমে এই স্প্রে প্রয়োগ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি ভারতের ২০টি এলাকায় করোনার মৃদু উপসর্গ আছে এমন ৩০৬ জন প্রাপ্তবয়স্কের ওপর এই স্প্রে প্রয়োগ করে। যাঁদের মধ্যে টিকা নেওয়া এবং টিকা না নেওয়া ব্যক্তিরাও রয়েছেন।
ট্রায়ালটি এনওএনএস প্লাস স্ট্যান্ডার্ড অব কেয়ার এবং প্লাসিবো নাসাল স্প্রের প্রয়োগের ওপর সাত দিনের চিকিত্সার মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই সাত দিনের চিকিৎসায় এনওএনএস প্রতি নাসারন্ধ্রে দুবার করে দিনে ছয়বার প্রয়োগ করা হয়েছিল।
গবেষণাটি করোনার ডেলটা ও অমিক্রন ধরনের প্রাদুর্ভাবের সময় চালানো হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার উচ্চ ঝুঁকির যেসব রোগী এনওএনএস নিয়েছেন, তাঁদের শরীরের ভাইরাসের মাত্রা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এ অবস্থা চিকিত্সা চলাকালীন সাত দিন স্থায়ী ছিল। এনওএনএস প্রয়োগের পর ভাইরাসের মাত্রা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৯৩.৭ শতাংশ এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৯৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। করোনার টিকা নেওয়া এবং না নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রেও একই ফলাফল পাওয়া গেছে।
গ্লেনমার্কের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং এই গবেষণা দলের সদস্য মনিকা টেন্ডন। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, শক্তিশালী ডাবল-ব্লাইন্ড ট্রায়াল এনওএনএস রোগীর দেহে উল্লেখযোগ্য কার্যকর ও লক্ষণীয় নিরাপত্তা দেখিয়েছে। করোনাভাইরাস ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সম্ভাবনা রয়েছে এই স্প্রের। বর্তমানে মহামারির ভয়াবহ সংক্রমণ পর্যায়ে এটির ব্যবহারও সহজ।
ভারতের ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) থেকে প্রস্তুত এবং বিপণনের অনুমোদন পাওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারিতে ফেবিস্প্রে নামে এটি বাজারে আনা হয়েছিল।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নাইট্রিক অক্সাইড নাসাল স্প্রে (এনওএনএস) করোনাভাইরাসকে রোগীর নাকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশে বাধা দেয় ও ভাইরাসটিকে মেরে ফেলে এবং ভাইরাসের ধরন পাল্টানো ঠেকিয়ে দেয়। এ কারণেই এনওএনএসের ব্যবহারে ভাইরাসের মাত্রা দ্রুত কমে যায়। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, তিন দিনের মধ্যে এনওএনএস ব্যবহারকারীদের ভাইরাস নিরাময় হয়।
Discussion about this post