হার্টবিট ডেস্ক
ভুল অস্ত্রোপচারে সাবিনা আক্তার (২০) নামে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় মানিকগঞ্জের সিংগাইরের সিটি হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে হাসপাতালটির মালিক পালিয়ে গেছেন।
বুধবার (২৫ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপন দেবনাথের উপস্থিতিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাম্মা লাবিয়া অর্ণব ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে হাসপাতালটি সিলগালা ও দোষীদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
শাম্মা লাবিয়া অর্ণব বলেন, ‘হাসপাতালটির সরকারি কোনও নিবন্ধন পাওয়া যায়নি। একজন ডাক্তার ও পাঁচ জন নার্স রয়েছে হাসপাতালে। অভিযান চলাকালে মালিক নজরুল ইসলাম পালিয়ে যান। হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কোনও অনুমোদন না থাকায় সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।’
ইউএনও দিপন দেবনাথ জানান, সম্পূর্ণ অনুমোদনহীনভাবে এই বেসরকারি হাসপাতালটি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামীতে এ ধরনের অনুমোদনহীন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
এক মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হাসপাতালের সিকিউরিটি গার্ড হামিদুর রহমান ও আব্দুল করিম। ১৫ দিনের কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হাসপাতালের মালিক নজরুল ইসলাম স্বপনের স্ত্রী মান্না তানিয়া, মার্কেটিংয়ের সঙ্গে জড়িত পারভীন আক্তার, ফাতেমা আক্তার, সুমি আক্তার, শিল্পী আক্তার, আব্দুল বাতেন ও মনির হোসেন।
এদিকে, প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. ফারহানা নবিকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. ফারহানা নবি বলেন, ‘তদন্তের কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিক তদন্তকালে সিটি হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক নজরুল ইসলাম স্বপনের কাছে তার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিলাম- তিনি তা দেখাতে পারেননি। সরকারি কাগজে সিংগাইরে সিটি হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে কোনও হাসপাতাল নেই। যিনি প্রসূতির অস্ত্রোপচার করেছেন তিনি কোনও ডিগ্রিধারী চিকিৎসক নন। এমনকি যে অজ্ঞান করেছেন তারও কোনও ডিগ্রি নেই।’
Discussion about this post