হার্টবিট ডেস্ক
মেহেরপুরে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করেছে । ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০৮ জন রোগী।এছাড়া প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে নতুন রোগীর সংখ্যাও।
এ বিষয়ে মেহেরপুর হাসপাতালটির ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ নিপু আক্তার বলেন, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ১০৮ জন। এ নিয়ে চারদিনে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩২৪ জন। আর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৩১ জন রোগী।
রোগী ভর্তির সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এসব রোগীদের অধিকাংশই পুরুষ এবং বয়সে তরুণ। রোগীর চাপ সামলাতে ২৫ জন সেবিকা (নার্স) ছাড়াও অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে নার্স এনে সেবা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিল মাস থেকে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ভর্তি থাকছেন ১০০-১২০ জন রোগী। এছাড়া প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ১০০-১১০ জন।
রোগীরা জানান, হাসপাতাল থেকে স্যালাইনসহ বেশ কিছু ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাইরে থেকেও কিছু ওষুধ কিনতে হচ্ছে। নার্সরা ভালোভাবে দেখভাল করছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভিড়ে অনেক স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ।
এদিকে, হঠাৎ করে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (আইইডিসিআর) জানানোর পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে বাড়তি ব্যবস্থা। স্যালাইনসহ অন্যান্য ওষুধপত্র ও চিকিৎসাসেবা ভালো করা হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক জমির মো. হাসিবুস সাত্তার।
তিনি বলেন, ডায়রিয়া হলো মূলত পানিবাহী একটি রোগ। এছাড়া রাস্তার খাবার, বাসি-পচা খাবার খেলেও ডায়রিয়া হতে পারে। তবে ডায়রিয়া হওয়ার মূল কারণ দূষিত পানি। খাবার পানিসহ নিত্য ব্যবহার্য কাজে বিশুদ্ধ এবং নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে হবে।
মেহেরপুর শহরে গতবারও ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল। কিন্তু এ সময়ে দেশের কোথাও ডায়রিয়া রোগী পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র মেহেরপুর জেলাতে আক্রান্তের বিষয়টি ওপর মহলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মেহেরপুর পৌরসভার মেয়রকে তাদের সাপ্লাইয়ের পানি পরীক্ষা করারও অনুরোধ করা হয়েছে।
আইইডিসিআরের সহকারী মাঠ গবেষক রেজাউল করীম বলেন, আমরা বাংলাদেশের মেহেরপুরসহ ২২টি জেলাতে কলেরার গবেষণা কাজ করছি। গত চারদিনে হঠাৎ এ জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ২৭ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর স্যাম্পল পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জনের শরীরে কলেরার জীবাণু শনাক্ত হয়েছে।
Discussion about this post