হার্টবিট ডেস্ক
দেশে প্রতি ১০০ জন প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে একজন দীর্ঘস্থায়ী মানসিক ব্যাধিতে (সিজোফ্রেনিয়া) আক্রান্ত। দুটি সরকারি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ রোগীই সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। উপজেলা পর্যায়েও যেন এমন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া যায়, সেভাবেই গাইডলাইন তৈরি হয়েছে বলে জানান মনোচিকিৎসকরা।
রোববার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেলে ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টয়ের উদ্যোগে সিজোফ্রোনিয়া নামক গুরুতর মানসিক রোগের একটি গাইডলাইনের মোড়ক উন্মোচনের অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মনোচিকিৎসকেরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুররশীদ আলম।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা তাদের বক্তব্যে সিজোফ্রোনিয়া গাইডলাইনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন ও এরকমভাবে আরও ৫টি গুরুতর রোগের গাইডলাইন প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অ্যাসোসিয়েশনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, দেশ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এগিয়ে যাচ্ছে। সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণেই দেশে কোভিডে মৃত্যু নেই বললেই চলে। শুধু শারীরিক রোগ নিয়ন্ত্রণ করলেই চলবে না, মানসিক স্বাস্থ্যের কথাও চিন্তা করতে হবে। অসংক্রামক রোগের মধ্যে মানসিক রোগ বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী যেমন মানসিক রোগ বাড়ছে বাংলাদেশে তেমন বাড়ছে।
এখনও মানসিক রোগ একটি ট্যাবু। অনেকে সামাজিক লজ্জার কারণে চিকিৎসা নিতে চায়না। মানসিক রোগের কারণেই প্রতিবছর ১৭-২০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করছে। বিষণ্ণতা থেকে সামাজিক, পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়। দেশে মানসিক স্বাস্থ্য আইন আছে, মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। পাবনা মানসিক হাসপাতাল আরও বিস্মৃত করার কাজ চলছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হচ্ছে দেশব্যাপী। আটটি বিভাগের হাসপাতালগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সিজোফ্রেনিয়ার সব রোগী যেন চিকিৎসা পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের চিকিৎসকরাই ভালো মানের সেবা দিতে পারেন, আমরা সেই ব্যবস্থা করছি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, বিপিএ অনেক পরিশ্রম করে এই গাইডলাইনটি তৈরি করেছেন। গাইডলাইনটি যাতে উপজেলা পর্যন্ত সবাই ব্যবহার করে সেজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সচেষ্ট থাকবে। সব জেলার সিভিল সার্জনসহ মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্ট সবার কাছে এ গাইডলাইন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও পোস্ট কোভিডে মনোরোগে আক্রান্ত হয়েছে তাদের চিকিৎসার ব্যাপারেও মনোচিকিৎসকদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ তারিকল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) অধ্যাপক মো. আজিজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা, সাইকোলজিস্ট ও অন্যান্য মেন্টাল হেলথ প্রফেশনাল এবং মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post