হার্টবিট ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ চারটি দেশের শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে এক ধরনের হেপাটাইটিস বা জন্ডিস রোগ। আক্রান্ত এই শিশুদের রক্তে প্রচলিত হেপাটাইটিসের জীবাণু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এসব দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে প্রথম এই হেপাটাইটিস শনাক্ত হয় এবং ৫ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে এই রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা পৌঁছেছে ৮৪ জন। সামনের দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
যুক্তরাজ্য ছাড়াও ইউরোপের চার দেশ ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও যুক্তরাষ্ট্রেও এ রোগে আক্রান্ত শিশুর সন্ধান পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে এই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে ৯ শিশু। তারা সবাই দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় আলাবামা অঙ্গরাজ্যের এবং আক্রান্তদের সবার বয়স ১ থেকে ৬ বছরের মধ্যে। আলাবামা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ২ জনের লিভার প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন।
তবে ইউরোপের চার দেশে এখন পর্যন্ত কতজন শিশু আক্রান্ত হয়েছে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য এখনও নেই বলে বিবিসিকে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ প্রতিরোধ সংস্থা ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (ইসিডিসি)।
ডব্লিউএইচও ও ইসিডিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত জন্ডিস বা হেপাটাইটিস হলে রোগীর গায়ে জ্বর থাকলেও নতুন এই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত শিশুদের অধিকাংশই এই উপসর্গ বোধ করেনি। বরং জন্ডিস, ডায়রিয়া, বমি ও লিভারে প্রদাহজনিত কারণে পেটব্যথার উপসর্গ দেখা গেছে আক্রান্তদের মধ্যে।
এছাড়া ছয় দেশে এ পর্যন্ত যত রোগী এই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের সবার বয়স ১০ বছরের নিচে। এছাড়া ১০ বছরের ঊর্ধ্বে কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক কিংবা প্রাপ্তবয়স্ক কোনো ব্যক্তি এই জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন— এমন তথ্য কোথাও পাওয়া যায়নি।
বিশ্বে এ পর্যন্ত ৫টি হেপাটাইটিস ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে— এ, বি, সি, ডি ও ই; কিন্তু এসব ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের কারো ক্ষেত্রেই এ পর্যন্ত লিভারে প্রদাহের মতো উপসর্গ দেখা যায়নি।
ইসিডিসির কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘আক্রান্ত শিশুদের নমুনা বিশ্লেষণ করে প্রচলিত কোনো হেপাটাইটিস ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। করোনা টিকা নেওয়া কিংবা খাদ্য, পানীয় অথবা ব্যক্তিগত কোনো অভ্যাসের কারণে এই রোগ হয়েছে— এমন প্রমাণও আমরা পাইনি।’
‘ঠিক কী কারণে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে, তা এখনও আমাদের কাছে অস্পষ্ট। তবে ইসিডিসি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে, যেসব দেশে এই হেপাটাইটিস দেখা দিয়েছে, তারাও পৃথকভাবে বিষয়টির অনুসন্ধান করছে।’
সূত্র: বিবিসি, এএফপি।
Discussion about this post