হার্টবিট ডেস্ক
উদীয়মান বাজারে বিনিয়োগকারী হেলথকেয়ার গ্রুপ এভারকেয়ার গ্রুপ দেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অক্সিজেনে অনন্যা আবাসিক এলাকায় নতুন হসপিটাল উদ্বোধন করতে যাচ্ছে। আগামী এপ্রিল মাসে উদ্বোধন হতে যাওয়া হাসপাতালটি হবে স্বাস্থ্যসেবায় গ্রুপটির নতুন সংযোজন।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ মেডিকেল সেবা ও ৫ শতাধিকেরও বেশি মেডিকেল প্রোফেশনালসদের নিয়ে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামের সর্বস্তরের রোগীদের সর্বোচ্চমানের সেবা নিশ্চিত করবে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার অনন্যা আবাসিক এলাকায় ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট আন্তর্জাতিকমানের এই হসপিটালটি বন্দরনগরীর সর্বপ্রথম মাল্টি ডিসিপ্লিনারি সুপার-স্পেশালিটি টারশিয়ারি কেয়ার হসপিটাল হতে যাচ্ছে।যাত্রা শুরু করার প্রথম দিন থেকেই মেডিকেল দক্ষতা, প্রশিক্ষিত লোকবল এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে সেবা দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এভারকেয়ার হাসপাতাল। ৪৭০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে থাকছে সর্বাধুনিক আইসিইউর ব্যবস্থা। চট্টগ্রামের সকল শ্রেণির বাসিন্দাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে ৫০০ এর বেশি মেডিক্যাল প্রফেশনালদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ২৭টি বিশেষ ও উপ-বিশেষ বিভাগ। এছাড়াও রয়েছে ২৪/৭ জরুরি বিভাগ ও সুসজ্জিত ক্যাবিন রুম। অনুমোদিত দুটি অ্যাম্বুল্যান্সসহ হাসপাতাল জুড়ে রয়েছে দশটি লিফট।
বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চিকিৎসকরা সেবা দেবেন এই হাসপাতালে। হাসপাতালটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক এক্সরে, সিটি স্ক্যান ও এমআরআই মেশিন। জরুরি ভিত্তিতে রোগীদের রক্তের সংকট মোকাবেলায় রয়েছে ব্লাড ব্যাংক। গর্ভবতী রোগীদের জন্যও রয়েছে ফিমেল কেয়ার রুমসহ অন্যান্য সুব্যবস্থা। জরুরি ও জটিল অপারেশন করার সময় তথ্য আদান-প্রদানে ডাক্তারদের জন্য রয়েছে আলাদা কনফারেন্স রুম। তাছাড়া ডাক্তারদের জন্য রয়েছে লাইব্রেরি। বাচ্চাদের জন্যও রয়েছে প্লে-কর্ণার। এছাড়াও মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিবে হাসপাতালটি। তাই অনুমতি সনদ পেতে ইতোমধ্যে আবেদন প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। তাছাড়া স্বল্প আয়ের মানুষের সেবা পেতে রয়েছে বহিঃবিভাগ। সেখানে স্বল্পমূল্যে সেবা প্রদান করা হবে।
৪ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুটের বিশাল আয়তনের জায়গা নিয়ে ঢাকায় অবস্থিত দেশের একমাত্র জেসিআই স্বীকৃত হসপিটাল এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম, ঢাকার চেয়েও বৃহৎ পরিসরে নির্মিত হয়েছে। ২০১৪ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয় এই হাসপাতালটির।
যাত্রা শুরুর প্রসঙ্গে এভারকেয়ার গ্রুপ-এর সিইও ম্যাসিমিলিয়ানো কোলেলা বলেন, ‘চট্টগ্রামের মানুষের কাছে বিশ্বমানের সেবা পৌঁছে দিতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। চট্টগ্রামের একমাত্র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হসপিটাল হিসেবে, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম সেবার মানদণ্ড এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশে এভারকেয়ার গ্রুপ ও আমাদের দলগুলো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে এবং স্বাস্থ্যসেবার মান রূপান্তরিত করতে পথ সঞ্চালকের ভূমিকা রাখছে যা নিয়ে আমি সত্যিই গর্বিত।
এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা’র সিইও ডা. রত্নদ্বীপ চাস্কার বলেন, ঢাকায় অবস্থিত শাখার মতো, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামও মেডিকেল দক্ষতা, প্রশিক্ষিত লোকবল এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে প্রথম দিন থেকেই সর্বাধুনিক সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যস্থির করেছে। বিদেশ ভ্রমণের ঝামেলা ছাড়াই রোগীরা নিজ শহরেই যেন বিশ্বমানের সেবা পেতে পারে সেই বিষয় নিশ্চিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
হাসপাতালের জিএম ফজলে আকবর বলেন, ‘চট্টগ্রামে নির্মিত এভারকেয়ার হাসপাতালের অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন একেবারে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। আগামী মাসের ৮ তারিখে হাসপাতাল চালু হবার পরিকল্পনা রয়েছে। হাসপাতালটি চালু হলে মানুষকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আর ঢাকা বা ভারতে যেতে হবে না।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কেনিয়া এবং নাইজেরিয়াসহ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকায় সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে এভারকেয়ার। প্রতিষ্ঠানটির অধীনে রয়েছে ২৯টি হাসপাতাল, ১৬টি ক্লিনিক, ৭৫টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ২টি ব্রাউনফিল্ড অ্যাসেটস। এছাড়াও সিস্টেম্যাটিক স্বাস্থ্যসেবা তৈরি করতে প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার ৩৫০ জন কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।
Discussion about this post