এম ইয়াছিন আলী
ডায়াবেটিসের রোগীরা, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিরা কাঁধের ব্যথায় বেশি ভোগেন। এর মূল কারণ অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস, যা পরে কাঁধের জয়েন্টকে শক্ত করে ফেলে। এতে রোগী হাত ওপরে ওঠাতে পারেন না, পিঠের দিকে নিতে পারেন না, জামাকাপড় পরতে পারেন না, এমনকি চুল আঁচড়াতেও কষ্ট হয়।
অনেক সময় এমন হওয়ার কারণ হয়তো হাত দিয়ে ভারী কিছু ওঠাতে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিলেন, যা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। পরে ব্যথা ক্রমে বেড়ে যায়, পাশাপাশি কাঁধের নড়াচড়া কমে যায়। অনেক রোগীর সারভাইক্যাল স্পন্ডিলাইসিস বা ঘাড়ের ক্ষয় রোগ আছে, যে কারণে ঘাড় থেকে হাতে ব্যথা চলে আসে। এ ব্যথার কারণে রোগী হাতের নড়াচড়া কমিয়ে দেন ও ক্রমে জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়।
আবার বাসে বা গাড়িতে যাওয়ার সময় কড়া ব্রেক করা হলে যাত্রী হাত দিয়ে শক্ত করে গাড়ির হাতল ধরে সুরক্ষার চেষ্টা করেন। এ সময় এতে অনেকে ব্যথা পান, যা পরে কাঁধব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া বয়স চল্লিশের ওপর হলে ডিজেনারেটিভ বা ক্ষয়জনিত সমস্যা শুরু হয়। জয়েন্টের অভ্যন্তরীণ সাইনোভিয়াল ফ্লুইড কমে যেতে থাকে। এ কারণে কাঁধে ব্যথা হতে পারে। এ রোগটিও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশি হয়ে থাকে।
খুব ব্যথা থাকলে চিকিৎসক ব্যথা কমাতে ব্যথানাশক ওষুধ দিতে পারেন, তবে তা পরামর্শ নিয়েই সেবন করা উচিত। মাংসপেশি শিথিল করতে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে। রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক ও সময়োপযোগী ফিজিওথেরাপি। শেখানো ব্যায়াম নিজে বাড়িতে প্রতিদিন করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। ধৈর্য ধরে ব্যায়াম করতে হবে। পুরোপুরি সারতে ছয় মাস, এমনকি এক বছরও লেগে যেতে পারে। এ ছাড়া এ রোগের চিকিৎসায় কিছু ইলেকট্রোথেরাপিউটিক এজেন্ট উপকারী।
এম ইয়াছিন আলী, ফিজিওথেরাপিস্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা
Discussion about this post