হার্টবিট ডেস্ক
কিডনি সুরক্ষায় প্রয়োজন জ্ঞানের সেতুবন্ধন- এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২২ উদযাপন করেছে ৪শ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক এবং বহুমুখী বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র ইমপেরিয়াল হাসপাতাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় হাসপাতাল ক্যাম্পাসে এক বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এতে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। পরে হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে নেফ্রোলজি বিভাগের উদ্যোগে বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ইমপেরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেন, আমি নিজে কিডনি রোগে আক্রান্ত। দশ বছর আগে আমার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আমি ভালোভাবেই জানি একজন কিডনি রোগীর কষ্ট। তারা যে মানসিক, শারীরিক ও অর্থনৈতিক সমস্যায় ভোগে তা অবর্ণনীয়। আমার কিছু নিজস্ব সম্পদ বিক্রি করে আমি নিজের চিকিৎসা করেছি। কিন্তু এই ধরনের সৌভাগ্য কয়জনের হয়। যাদের এই ব্যয়বহুল চিকিৎসার সামর্থ নেই তাদের জন্য চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিতসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ’র নেফ্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, বিশ্বের ৯০ শতাংশ কিডনি রোগী জানেনই না যে তিনি কিডনি রোগে ভুগছেন। তাই কিডনি রোগ নির্ণয়ে বছরে একবার হলেও প্রাপ্ত বয়স্কদের অল্প খরচের দুই তিনটি পরীক্ষা করা উচিত।
সেমিনারে বিষয়ভিত্তিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার দত্ত ও ডা. শওকত আজাদ। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন চমেকের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. দীপ্তি চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস, বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশানের কেন্দ্রীয় সাধারণ ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কেবিএম হাদিউজ্জামান। প্যানেল মেম্বার ছিলেন অধ্যাপক ডা. এম এ কাসেম, অধ্যাপক ডা. এ এম এম এহতেশামুল হক, অধ্যাপক ডা. মো. নুরুল হুদা।
ইমপেরিয়াল হাসপাতালের একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর ডা. আরিফ উদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় সেমিনার বক্তারা বলেন, বিশ্বের ৮৫ কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুই যুগ আগে মৃত্যুর কারণ হিসেবে কিডনি রোগ ছিল ২৭তম স্থানে। বর্তমানে সপ্তম। ২০৪০ সালে আসবে পঞ্চম স্থানে। বিশ্বের প্রতি ১০ জনে ১ জন দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত।
বিশ্বে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রতিবছর আকস্মিক কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়। আকস্মিক কিডনি রোগের প্রধান কারণ- ডায়েরিয়া, পানিশূন্যতা, বিভিন্ন ধরনের ক্ষত ইত্যাদি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৪০ সালে ৫০ লাখের বেশী রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা যাবে। বাংলাদেশে দুই কোটির বেশী মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। এই রোগের একটা ভীষণ খারাপ দিক হল, প্রাথমিক অবস্থায় বোঝা যায় না। এটা হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগ বাড়িয়ে দেয়।
তবে আশার জায়গা হল, এই রোগ প্রতিরোধযোগ্য। কিডনি রোগ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে ৫০ শতাংশ ভালো হওয়া সম্ভব।
Discussion about this post