হার্টবিট ডেস্ক
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) জনস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণার ব্যাপ্তি ও স্বল্প খরচ দেখে অভিভূত হয়েছেন কানাডিয়ান হাই কমিশনার ড. লিলি নিকলস। আইসিডিডিআর,বি এবং কানাডার জীবনরক্ষাকারী অংশীদারিত্বের প্রশংসা করেছেন তিনি।
বুধবার (১৬ মার্চ) আইসিডিডিআর,বির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ১৫ মার্চ বিকেলে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার প্রথমবারের মতো ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত আইসিডিডিআর,বি পরিদর্শন করেন। সফরে তার সাথে ছিলেন ফার্স্ট সেক্রেটারি (ডেভেলপমেন্ট) জোসেফ সেভাতু এবং বাংলাদেশে কানাডা হাই কমিশনের ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইজার ফারজানা সুলতানা।
এ সময় ড. লিলি বিশ্ববিখ্যাত জনস্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি এবং তার জীবনরক্ষাকারী কাজ সম্পর্কে জানতে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আইসিডিডিআর,বি ও কানাডার মধ্যে দুই দশকেরও বেশি স্থায়ী অনন্য সহযোগিতামূলক সম্পর্কের প্রশংসা করেন।
একইসঙ্গে ড. লিলি গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় পরিচালিত একটি প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকারের (এসআরএইচআর) কাজের প্রশংসা করেন, যা কানাডা সরকারের জন্য একটি অগ্রগণ্য বিষয়।
এর আগে, আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ এবং সিনিয়র লিডারশিপ টিম সফরকারী দলটিকে স্বাগত জানান। ড. আহমেদ এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় এর বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে জানান এবং কানাডার সহায়তায় প্রতিষ্ঠানটির জীবনরক্ষাকারী গবেষণা ও উদ্ভাবনের ওপর আলোকপাত করেন। এছাড়াও তিনি বিশ্বের নিম্ন ও মাঝারি আয়ের দেশগুলো যেসব স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে তা সমাধানে আইসিডিডিআর,বি কীভাবে সাধারণ ও বাস্তবমুখী গবেষণা করে এবং জ্ঞানকে কাজে রূপান্তরিত করে থাকে সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেন।
হাই কমিশনার আইসিডিডিআর,বি-র মিউকোসাল অ্যান্ড ভ্যাক্সিনোলজি ল্যাবরেটরি ঘুরে দেখেন। এ সময় আইসিডিডিআর,বি-র ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর ও ম্যাগসেসেই পুরস্কার বিজয়ী ড. ফেরদৌসী কাদরী তাকে কলেরা টিকা, টাইফয়েড টিকা ও বাংলাদেশে প্রদত্ত কোভিড-১৯-এর বিভিন্ন টিকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং প্রকৃতি থেকে সংঘটিত সংক্রমণ সম্পর্কে বলেন।
সফরকারীরা মহাখালীর ঢাকা হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ইউনিট, ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট এবং ব্রেস্টফিডিং কাউন্সেলিং সেন্টারও পরিদর্শন করেন। হেড অব হসপিটালস ডা. বাহারুল আলম এবং আইসিডিডিআর,বি-র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. মো. যোবায়ের চিশতি তাদের হাসপাতালের কর্মকাণ্ড এবং শিশুদের তীব্র নিউমোনিয়া ও হাপোক্সিমিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত বাবল সিপ্যাপসহ স্বল্প খরচের বিভিন্ন উদ্ভাবন সম্পর্কে বলেন।
এছাড়াও তাদেরকে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় পরিচালিত একটি প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (এসআরএইচআর)-সংক্রান্ত পরামর্শ সেবা সম্পর্কে জানানো হয়।
এ সময় ড. লিলি নিকলস বলেন, এখানে আসা এবং আইসিডিডিআর,বি-র কাজ সম্পর্কে সরাসরি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা আমার জন্য একটি সম্মানের বিষয়। এটি সত্যিই একটি অনুপ্রেরণামূলক সফর। জীবনরক্ষাকারী গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য আইসিডিডিআর,বি-কে জানাই অভিনন্দন!
ড. আহমেদ হাই বলেন, আইসিডিডিআর,বি কানাডা এবং এর জনগণের অতুলনীয় সহায়তার জন্য তাদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। এই সহায়তা শুধু বাংলাদেশই নয় বরং বিশ্বের অন্যান্য স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশকে গবেষণা পরিচালনায় সক্ষম করে তুলেছে।
তিনি আরও বলেন, কানাডার সহায়তা আমাদের ঢাকা ও চাঁদপুরে অবস্থিত মতলব হাসপাতালে প্রতি বছর বিনামূল্যে দুই লাখ রোগীকে ডায়রিয়া ও অপুষ্টির চিকিৎসা দিতে সাহায্য করে।
উল্লেখ্য, কানাডা সরকার ১৯৯৮ সাল থেকে আইসিডিডিআর,বি-র মূল ও প্রকল্প কার্যক্রমে ধারাবাহিকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে।
Discussion about this post