হার্টবিট ডেস্ক
আগামী জুন মাসের আগে কোভ্যাক্স থেকে ১ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার টিকা পাবে বাংলাদেশ। কোভ্যাক্সের আওতায় বিশ্বজুড়ে বিনা মূল্যে টিকা সরবরাহের একটি পরিকল্পনা গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তত্ত্বাবধানে চলতি বছর বাংলাদেশ কোভ্যাক্স থেকে ১ কোটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা। আজ বুধবার (৩ মার্চ) বাসসকে এ তথ্য জানান তিনি।
অধ্যাপক মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, ‘কোভ্যাক্স স্কিমের অংশ হিসেবে আমরা মে মাসের মধ্যে এক কোটি ৯ লাখ ভ্যাকসিন পাবো। কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় এক কোটি ৯ লাখ ভ্যাকসিনের মধ্যে ২০ লাখ চলতি মাসেই আসবে এবং বাকি ভ্যাকসিন পর্যায়ক্রমে দেশে পৌঁছাবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, জুনের আগে সবচেয়ে বেশি টিকা যে দেশগুলো পাবে, তার মধ্যে বাংলাদেশ আছে ৪ নম্বরে। এ ছাড়া অন্যদেশগুলো হলো নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ব্রাজিল। আর আগামী মে মাসের শেষ নাগাদ বিশ্বের ১৪২টি দেশে ২৩ কোটি ৮২ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করা হবে।
করোনা প্রতিরোধে দরিদ্র এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে বিনা মূল্যে টিকা সরবরাহ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে বৈশ্বিক উদ্যোগ হলো কোভ্যাক্স। এই উদ্যোগে প্রথম টিকা পেয়েছে আফ্রিকার দেশ ঘানা। কোভ্যাক্স কর্মসূচিতে ১৯৮টি দেশ অংশ নিয়েছে। তবে সব দেশই প্রথম দফায় টিকা সরবরাহের আওতায় আসছে না।
গরিব দেশগুলো ধনীদের চেয়ে টিকাদানে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। টিকা মজুত করে রাখার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস গত সোমবার ধনী দেশগুলোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বের সব দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সুরক্ষা দিতে চাই।
কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় জুনের আগে বাংলাদেশ পাবে ১ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার টিকা। এ ছাড়া বেশি টিকা পেতে যাওয়া অপর দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান ১ কোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার, নাইজেরিয়া ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার, ইন্দোনেশিয়া ১ কোটি ১৭ লাখ ৪ হাজার ৮০০ ও ব্রাজিল ৯১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ টিকা পাবে।
তালিকায় এর পরে পাঁচটি দেশ রয়েছে। এর মধ্যে ইথিওপিয়া ৭৬ লাখ ২০ হাজার, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো ৫৯ লাখ ২৮ হাজার, মেক্সিকো ৫৫ লাখ ৩২ হাজার, মিসর ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ ও ভিয়েতনাম ৪১ লাখ ৭৬ হাজার টিকা পাবে।
ইরান, মিয়ানমার, কেনিয়া ও উগান্ডাও টিকা পাওয়ার তালিকায় রয়েছে। প্রতিটি দেশ ৩০ লাখের বেশি টিকা পাবে। মে মাসের শেষ দিকে ভারতও কোভ্যাক্সের টিকার বড় সরবরাহ পেতে পারে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ টুভালু ৪ হাজার ৮০০ ডোজ টিকা পাবে। নাউরো ও মোনাকো পাবে মাত্র ৭ হাজার ২০০ ডোজ টিকা।কোভ্যাক্স কর্মসূচিতে এ বছর শেষ হওয়ার আগে ৯২টি দরিদ্র দেশের ২৭ শতাংশ জনগণকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
কোভ্যাক্স প্রথম দফায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের ২৩ কোটি ৭ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে। ফাইজার ও বায়োএনটেকের ১২ লাখ ডোজ টিকাও এর মধ্যে থাকবে। তবে ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকা বিশেষ তাপমাত্রায় সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন। দুই ধরনের টিকার ক্ষেত্রেই দুটি ডোজ নেওয়া প্রয়োজন।
ঘানা, আইভরি কোস্ট, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও কলম্বিয়া প্রথম দফায় কোভ্যাক্সের টিকা পেয়েছে। গতকাল নাইজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, কম্বোডিয়াতেও কোভ্যাক্সের প্রথম দফার টিকা পৌঁছেছে। কঙ্গোতেও টিকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
Discussion about this post