অনলাইন ডেস্ক
বলিউড ইন্ডাস্ট্রির ‘দিলসে’ খ্যাত সারা জাগানো নায়িকা মনীষা কৈরালা। ২০১২ সালে তিনি ক্যানসার নামক মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হন। দীর্ঘ পাঁচ বছর এই মরণব্যাধির সাথে যুদ্ধ করে তিনি ক্যানসারকে পুরোপুরি বিদায় জানাতে সক্ষম হন ২০১৭ সালে।
ভারতীয় এই অভিনেত্রীর জন্ম নেপালের কাঠমন্ডুতে। তার বাবা নেপালের সাবেক মন্ত্রী প্রকাশ কৈরালা। তার দাদাও ছিলেন বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব নেপালের বাইশতম প্রধানমন্ত্রী বিশ্বেশ্বর প্রসাদ কৈরালা।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিলেও পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন অভিনয়কে। ১৯৯১ সালে সুভাষ ঘাইয়ের হাত ধরে তার অভিনয় জীবনের শুরু।
২০১০ সালে বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করলেও এই স্ম্পর্ক ভেঙে যায় বিয়ের ঠিক দুই বছরের মাথায়। আর এই সময়টাতেই জীবনের কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হয় তাকে।
কারণ ২০১২ সালের এই সময়টাতে তার ওভারিয়ান ক্যানসার ধরা পড়ে। মহিলাদের ডিম্বানু সৃষ্টিকারক অংশের টিস্যুতে ক্যানসার হওয়াকে ওভারিয়ান ক্যানসার বলা হয়। বিভিন্ন টেস্টের মাধ্যমে এই রোগের শনাক্ত সম্ভব। সাধারণত রক্ত পরীক্ষা, সিটি স্ক্যান, তলপেট ও পেলভিকের আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যান পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ শনাক্ত করা হয়ে থাকে।
ওভারিয়ান ক্যানসারের চিকিৎসা করা হয় সাধারণত কেমোথেরাপি, অপারেশন এবং রেডিয়েশন থেরাপি। এই সব চিকিৎসার সঙ্গে পরিপূরক চিকিৎসা চলে অ্যাকুপাংচার, অ্যাকুয়াপ্রেসার, ভেষজ অষুধ ও যোগব্যায়াম।
এইসব চিকিৎসা নিতে বলিউড ইন্ড্রাস্ট্রি থেকে দূরে সরে চিকিৎসার জন্য মনীষা কৈরালাকে পাড়ি জমাতে হয় সুদূর নিউ ইয়র্কে।
চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে এক মুহূর্তের জন্যও মনোবল হারান নি তিনি। তিনি মনে করেন ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিকে জয় করতে হলে রোগীর মধ্যে থাকতে হবে গভীর আত্মবিশ্বাস।
তার আত্মজীবনী হিলডে ওভারিয়ান ক্যানসারের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে যা ক্যানসার জয়ী এই নায়িকাকে উপজীব্য করে লেখা। আত্মজীবনীটির নাম ‘হিলডঃ হাও ক্যান্সার গেইভ মি নিউ লাইফ’। বইটিতে তিনি তাঁর ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন।
ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করার সময়গুলোতে তিনি উপলব্ধি করেন মানুষের জীবন কতোটা ক্ষণস্থায়ী। তাই ক্যানসার জয়ের পর তিনি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত হন। বর্তমানে ক্যানসার জয়ী এই অভিনেত্রী নারীর অধিকার, নারীর প্রতি সহিংসতা দমন, মানব পাচার ও ক্যানসার বিষয়ক সচেতনতায় কাজ করছেন।
Discussion about this post