হার্টবিট ডেস্ক
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্তে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছেন দক্ষিণ কোরীয় গবেষকরা। এর মাধ্যমে ২০-৩০ মিনিটের মধ্যেই ওমিক্রন শনাক্ত করা সম্ভব। যদিও এ প্রযুক্তির বাণিজ্যিক ব্যবহার এখনও শুরু হয়নি।
এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআই।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার পোহাং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পোস্টেক) জানায়, রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক লি ইয়ং উকের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল এ মলিকিউলার ডায়গনস্টিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে। নতুন এ প্রযুক্তির মাধ্যমে করা কোভিড পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে প্রকাশিত হবে। তবে এর বাণিজ্যিক ব্যবহারে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কোভিডের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের স্পাইকে ২৬-৩২ বার রূপান্তর হয়। ভ্যারিয়েন্টটির এ স্পাইক প্রোটিনই মানবদেহের কোষকে সংক্রমণের কাজটি করে থাকে।
পিসিআর পরীক্ষায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা গেলেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা সম্ভব না। গবেষকদলের মতে, এ প্রযুক্তি “সিঙ্গেল নিউক্লিউটাইড বেস”- এ ভ্যারিয়েন্টের স্পাইকের রূপান্তরের পার্থক্য নিরুপণ করতে পারে, যা পিসিআর পরীক্ষায় সম্ভব না।
বর্তমানে পিসিআর পরীক্ষা ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ার রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধকেন্দ্র জিন বিন্যাস এবং সুর্নিদিষ্ট ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমেও কোভিড পরীক্ষা করছে।
অধ্যাপক লিয়ের ভাষ্যমতে, পিসিআর পরীক্ষায় ওমিক্রন শনাক্তে এন জিনের জন্য শক্তিশালী সংকেত পাওয়া গেলেও এস জিনের জন্য দুর্বল সংকেত পাওয়া যায়। গুপ্ত অবস্থায় থাকা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের ক্ষেত্রে এন ও এস দুটি জিনই পজিটিভ হতে হয়। অন্যথায় বাকি ভ্যারিয়েন্ট থেকে একে আলাদা করা কষ্টসাধ্য। তবে নতুন উদ্ভাবিত আণবিক প্রযুক্তিতে কার্যকরভাবে নতুন এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা সম্ভব।
এছাড়া, পিসিআর পরিক্ষার ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ায়ও এ প্রযুক্তি কাজ করবে বলে জানান তিনি।
প্রচলিত প্রযুক্তিগুলোর মধ্য দিয়ে সাধারণত প্রতি ডিভাইসে ৯৬টির মতো নমুনা প্রক্রিয়া করা যায়। তবে গবেষকদের আশা, নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতি আধা ঘণ্টায় ১২৫টি নমুনা (প্রতি ঘণ্টায় ২৫০টির বেশি নমুনা) প্রক্রিয়া করা যাবে।
এছাড়া, বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন না হওয়ায় সাধারণ কিট ব্যবহার করে খুব সহজে এ পরীক্ষা করা যাবে। চার দিনেই এ কিট তৈরি করা সম্ভব।
অধ্যাপক লি বলেন, “আমি আশা করছি, এ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা খুব দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব। আমরা করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত শনাক্ত ও তা মোকাবিলার চেষ্টা করব।”
এখনও বাণিজ্যিকভাবে এ প্রযুক্তি ব্যবহৃত না হলেও বিজ্ঞানীদের ধারণা, এখনও অমিক্রনের পিসিআর পরীক্ষা পদ্ধতি আবিষ্কার না হওয়ায় আপাতত এ প্রযুক্তিকে সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
কবে নাগাদ এ প্রযুক্তির বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক লি বলেন, “আমার মনে হয় পরীক্ষামূলক ব্যবহারের পর আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এ প্রযুক্তির বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হবে।”
Discussion about this post