হার্টবিট ডেস্ক
দেশে প্রতিদিনই যখন সিজারিয়ান সেশকনে সন্তান জন্মদানের হার বাড়ছে, সেই সময়টিতে বিপরীত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ঢাকার অদূরের কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
রোববার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আট প্রসূতির সাতজনই স্বাভাবিক সন্তান প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) করেছেন।
এছাড়া গত নভেম্বর মাসে ১২টি সিজারিয়ান সেকশনের বিপরীতে ৮০টি নরমাল ডেলিভারি হয়েছে যা সিজারিয়ান সেকশনের প্রায় ৭ গুণ।
গত ২০১৭ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে অনুযায়ী, বাংলাদেশে সিজারিয়ান প্রসবের সংখ্যা শতকরা ৩১ ভাগ।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে যৌক্তিক কারণে সিজারিয়ান সেকশন দরকার হবে এমন সংখ্যাটি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা নির্ধারিত হারের দ্বিগুণেরও বেশি।
গত ২০০৪ সালে এই হার ছিল বছরে মোট ডেলিভারির ৫ শতাংশ, ২০০৭ সালে ৯ শতাংশ, ২০১১ তে ১৭ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ২৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ মশিউর রহমান জানান, নরমাল ডেলিভারি হতে হলে মাকে শুরুতেই আশ্বস্ত করতে হয়।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে আসা প্রসূতিকে শুরুতেই আমরা বোঝানোর চেষ্টা করি যে কোনো সমস্যায় আমরা আপনার পাশে আছি। আপনি স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের জন্য চেষ্টা করতে পারেন।
ডা. মশিউর রহমান বলেন, আমাদের গাইনি কনসালটেন্ট মিডওয়াইফাইরা মায়েদের আশ্বস্ত করেন যে, প্রয়োজনে সিজারিয়ান সেকশনের ব্যবস্থা আছে, তবে আপনি নরমাল প্রসবের জন্য চেষ্টা করতে পারেন।
তিনি বলেন, আমরা বোঝাতে চেষ্টা করি প্রয়োজনে অন্য হাসপাতালে নিতে হলে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স বিনামূল্যে সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। তখন অভিভাবক ও মায়েরা আশ্বস্ত হলে এই প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারের চেয়ে নরমাল ডেলিভারির হার প্রায় সাত গুণ। এটা সম্ভব হয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল চিকিৎসকের প্রচেষ্টায়। বিশেষ করে গাইনি বিভাগের এবং জরুরি মেডিকেলে অফিসারদের আন্তরিকতায়।
তিনি আরও বলেন, এই কাজ বাস্তাবায়নের জন্য একটা টিম জরুরি। এজন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটা বড় ভূমিকা ছিল।
ডা. মশিউর রহমান বলেন, অক্সিটোসিন যা সাধারণ ডেলিভারি দ্রুত হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে সেটিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ পাচ্ছি। এছাড়া এগুলো সংরক্ষণের জন্য দেড় বছর আগে আমরা অত্যাধুনিক ফ্রিজও পেয়েছি। সব মিলিয়ে আমরা চেষ্টা করছি সাধারণ ডেলিভারি নিশ্চিত করতে।
তিনি বলেন, প্রসবোত্তর ভাতা কার্যক্রম-ডিএসএফ’র মতো কোনো প্রোগ্রামের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা করা হলে এই হার আরও অনেক বেড়ে যেত।
Discussion about this post