হার্টবিট ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দ্রুত ছড়ালেও এখনও তা ডেল্টার থেকে ভয়ংকর নয় বলে জানিয়েছেন অণুজীববিজ্ঞানী ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্যনগর হাসপাতালে অনুষ্ঠিত ‘কোভিড-১৯, ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন, ডেলটা, ওমিক্রন- বিজ্ঞান, নৈতিকতা, বৈষম্য’ বিষয়ে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
বিজন কুমার শীল বলেন, ওমিক্রনকে ভয়ংকর ভাবার কারণ ভাইরাসটির মিউটেশন। এখন পর্যন্ত ডেল্টা ধরনের সর্বোচ্চ ১৫ বার মিউটেশন হয়েছে। সেখানে ওমিক্রনের মিউটেশন হয়েছে ৫০টি। এরমধ্যে ৩২টি মিউটেশন হয়েছে স্পাইক প্রোটিন। যে প্রোটিন দিয়ে সে মানুষকে খুব দ্রুত সময়ে সংক্রমিত করে এবং এই প্রোটিনের মাধ্যমে ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। এই যে ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে আমরা মনে করতে পারি ওমিক্রন ধরণের ইনফেক্টিভিটি বাড়তে পারে এবং ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা কমতে পারে। এ দুটো একত্রে করে মনে করা হচ্ছে হয়তো ওমিক্রন ডেল্টার চেয়েও ভয়ংকর হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ফিউরিন নামক একটি প্রোটিন পুরো ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যকে অনেকাংশে নির্ধারণ করে। ফিউরিন একটিভ এরিয়া যা সার্সকোভ-১ এ ছিল না, সার্সকোভ-২ তে আছে। যার ফলে সার্সকোভ-১ থেকে সার্সকোভ-২ বেশি ভয়ংকর। এখন যদি ওমিক্রন পিউরিন ভাইরাসকে মেনুপুলেট করতে পারে, যেমনটা ডেল্টা ভাইরাস করেছিল, এখনও ওমিক্রনের মেনুপুলেট আলফা ভাইরাসের মতই রয়েছে। এখন ওমিক্রন যদি সেখানে আরও কিছু পরিবর্তন ঘটাতে পারে তাহলে অবশ্যই এটা ভয়ংকর হতে পারে। আমার যেটা ধারণা ওমিক্রনে অধিকঅমাত্রায় যে মনসটার মিউটেশন হয়েছে, এটাই ভয়ের কারণ। এটা অনেক দ্রুত সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
এই অণুজীব বিজ্ঞানী আরও বলেন, এই মুহূর্তে ডেল্টার মত আতঙ্কিত অবস্থায় যায়নি ওমিক্রন। এই মুহূর্তে যে তথ্য উপাত্ত দেখছি ওমিক্রন ডেল্টার থেকেও মাইল্ডার। তবে এটাই শেষ নয়, ভাইরাসটি আরও খারাপ রুপ নিতে পারে। ওমিক্রন মিউটেশনের মাধ্যমে স্টাবিলাইজড হবে। যখনি ভাইরাসটি আফ্রিকা থেকে বাইরে আসবে, তখনি সে আরও স্টাবল হতে পারে।
ডেল্টা এবং আলফার ক্ষেত্রে যে পরিবর্তনগুলো ঘটেছিল, ওমিক্রনের ক্ষেত্রে যেন সেই পরিবর্তন না হয়, সেজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন এই গবেষক।
Discussion about this post