হার্টবিট ডেস্ক
আজ রোববার (১৪ নভেম্বর), বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। প্রতি বছর বাংলাদেশসহ প্রায় ১৭০টি দেশে দিবসটি পালিত হয়। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘ডায়াবেটিস সেবা নিতে আর দেরি নয়’।
বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সালে ১৪ নভেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে প্রতিবছর এ দিনটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়।
ডায়বেটিস একটি অনিরাময়যোগ্য রোগ। বিশ্বে ২০১৯ সালে মানুষের মৃত্যুর নবম প্রধান কারণ ছিল ডায়বেটিস। যার কারণে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যুর হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিওএইচও এর মতে, ১৯৮০ সালে বিশ্বে ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ কোটি আট লাখ, যা ২০১৪ সালে ৪২ কোটি ২০ লাখে পৌঁছেছে। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এ রোগে আক্রান্তের হার দিন দিন বাড়ছে।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির (বাডাস) এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ হিসাবে মোট জনগোষ্ঠীর এক-চতুর্থাংশেরও বেশি মানুষ রোগটি বহন করছেন। চলমান বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আরও ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর একটি জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ আর ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ।
এ সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে বাংলাদেশে প্রতি বছর অসংখ্য ডায়াবেটিস রোগী হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি, চোখ ও মাড়ির রোগে আক্রান্ত হন। অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করা ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতার শিকার হন, এমনকি অনেকে মারাও যান।
বর্তমানে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪৬ কোটি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ২০৩০ সালে এ সংখ্যা ৫৮ কোটিতে পৌঁছাবে।
দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্টজনেরা। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, নগরায়নের কারণে জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। কায়িক পরিশ্রমের অভাবে দিন দিন ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে। এ অবস্থায় রোগটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সময়মতো চিকিৎসা নিতে হবে। সচেতনতা তৈরিতে চিকিৎসক, গণমাধ্যম, সামাজিক সংগঠন ও বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ডায়াবেটিস সারাজীবনের রোগ। কিন্তু একে সুনিয়ন্ত্রিত রাখতে পারলে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। কাজেই এর ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে। অন্যদেরকে অবহিত করতে হবে। সরকার জনগণের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীও বিশেষ বাণী দিয়েছেন। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সমিতির অন্যান্য অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত অধিভুক্ত সমিতিগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে র্যালি বা পদযাত্রার পরিবর্তে রোড শো’র আয়োজন করা হয়েছে।
Discussion about this post