অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন
মানুষের শরীরে প্রত্যেকটা অঙ্গ অত্যন্ত মূল্যবান। তার মধ্যে নাক অনেক মূল্যবান একটি অঙ্গ। নাক দিয়ে মানুষ তার অতি প্রয়োজনীয় শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ এবং ত্যাগ করে। এর সঙ্গে সঙ্গে গন্ধও বুঝতে পারে। নাকের দুই পাশে দুটি ছিদ্রযুক্ত কক্ষ আছে। এই কক্ষ দুটির মাঝখানে যে একটি দেয়াল আছে একে সেপ্টাম বলা হয়। এই সেপ্টামে ফোমা হলে নাকের মাংশ বাড়তে পারে।
এছাড়া আরও যেসব কারণে এই রোগ হতে পারে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: নাকের বুটি বা মাংস বেড়ে গেলে।
* বাইরের শক্ত কিছু আটকে যাওয়া বা ঢোকা থেকে।
* অনেক সর্দিজনিত কারণে হতে পারে।
* সাইনুসাইটিসের জন্য হতে পারে।
* টিউমারজনিত কারণে (প্যাপিলোমা বা ফাইব্রোমা বা ক্যান্সার)।
* যে কোনো আঘাতের কারণে হতে পারে।
রোগের লক্ষণগুলো : এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর মধ্যে সচরাচর যে সমস্যাগুলো বা লক্ষণগুলো দেখা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
* নাকের ভিতর শিরশির করতে থাকে।
* নাক সব সময় ভারি বোধ হয়।
* নাক সব সময় বন্ধ থাকে, বিশেষ করে রাতে যখন ঘুমাতে যায় তখন যে পাশে কাত হয় তার বিপরীত পাশে।
* ফোলা ফোলা মনে হয়।
* নাকের উপরি ভাগে লাল রং হয়ে থাকে।
* নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া যায় না। বেশির ভাগ সময় মুখ হাঁ করে শ্বাস টানতে হয়।
চিকিৎসা : সঠিকভাবে কারণ বুঝে এই রোগের চিকিৎসা দিতে হবে।
* রোগীর শরীরে যদি জ্বর থাকে বা ব্যথা হয় তাহলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দিতে হবে। যেমন: রোগীকে দেওয়া যেতে পারে; ট্যাব নাপা ৫০০ এমজি বা ট্যাব পাইরেক ৫০০ এমজি বা ট্যাব এইস ৫০০ এমজি বা ফাস্ট ৫০০ এমজি বা ট্যাব, রিসেট বা ট্যাব প্যারাসিটামল ৫০০ এমজি ইত্যাদি। খাওয়ার নিয়ম : একটা করে ট্যাবলেট দিনে তিনবার করে ভরা পেটে খেতে হবে।
* বেশি করে নাক চুলকালে বা বন্ধ হলে মেবহাইড্রোলিন নাপাডিসাইলেট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধ ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়। যেমন, ট্যাব, মেরলিন বা ট্যাব, ইনসিভাল বা ট্যাব মেপাডিস বা ট্যাব, মেবাশিন বা ট্রাব, মেড্রলিন ইত্যাদি। খাওয়ার নিয়ম হলো, একটা করে ট্যাবলেট দিনে দুইবার খেতে হবে।
* টারফেনাডিন জাতীয় ওষুধ। এই ওষুধ ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়। যেমন ট্যাবলেট, ডাইনাফেন বা ট্যাব, নোসিজন ইত্যাদি। এই ওষুধ খাওয়ার নিয়ম হলো একটা করে ট্যাবলেট দিনে দুইবার খাওয়াতে হবে।
* যদি নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং হ্যানছেনি বা শিরশির বন্ধ করার জন্য জাইলোমেটাজলিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এটি স্প্রে ও ফোঁটা ফোঁটা আকারে ব্যবহার করা হয়। যেমন ড্রপ, এন্টাজন বা ড্রপ, রাইনোজল বা ড্রপ নোভিন ইত্যাদি। এই ওষুধ ব্যবহারের নিয়ম হলো: ছোট শিশুদের জন্য ০.০৫% এবং বয়স্কদের জন্য ০.১% বযস অনুযায়ী দিনে তিন থেকে চার ফোটা করে নাকের ভিতর দিয়ে নিঃশ্বাস টানতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রাথমিক অবস্থা থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। অন্যথায় জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
লেখক : অ্যাজমা ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ মেডিনেভা, মালিবাগ, ঢাকা।
Discussion about this post