হার্টবিট ডেস্ক
ষাটোর্ধ্ব দিনমজুর জালাল উদ্দিন একজন হৃদরোগী। কিছুদিন আগে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল তার হৃদরোগের সমস্যা ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা তাকে জানান, তার হার্টের্ দ্রুত পেসমেকার প্রতিস্থাপন করতে হবে। একথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন জালাল উদ্দিন। কীভাবে এতো হাজার টাকা খরচ করে চিকিৎসা করাবেন, তা ভেবে তার কান্না আর থামতে চায় না।
এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে জানান, তার চিকিৎসা এ হাসপাতালেই বিনামূল্যে হবে। অসহায় রোগীদের চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোটা অংকের টাকা অনুদান দিয়েছেন। সপ্তাহখানেক আগে তার হার্টে পেসমেকার স্থাপন করা হয়। বর্তমানে জালাল উদ্দিন সুস্থ আছেন।
দরিদ্র লন্ড্রি দোকানির মা করিমন বিবি। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় জালাল উদ্দিনের মতো তার হার্টেও পেসমেকার স্থাপন করা হয়েছে। শুনতে অনেকটা গল্পের মতো হলেও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতানে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে অসহায় হৃদরোগীরা নতুন জীবন ফিরে পাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অর্থ সহায়তায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে হার্টের রিং, পেসমেকার ও ভাল্ব প্রতিস্থাপন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সোমবার (৪ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু করেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দীন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা হার্টের রোগীদের যাচাই-বাছাই করে দরিদ্রদের এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার হেলাল উদ্দিন, সাদেকুর, জালাল ও আহমেদ হোসাইন নামে চারজন দরিদ্র হৃদরোগীর হার্টে রিং প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এর আগে শনিবার (২ অক্টোবর) পরীক্ষামূলকভাবে দুই রোগীকে অস্ত্রোপচার করা হয়।
জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে সাদেকুর বলেন, ‘সরকারের এ সহযোগিতা গরিব মানুষের জন্য ভালোই হবে। প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমি দোয়া করি। উনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।’ তিনি বলেন, এ চিকিৎসায় অন্যান্য হাসপাতালে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হতো। অথচ এখানে একটাকাও লাগেনি।
করিমন বিবির ছেলে নুর হোসেন বলেন, ‘এতো টাকা খরচ করে আমার মায়ের চিকিৎসা করানোর সামর্থ ছিল না। মাকে নিয়ে এক বছর ধরে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছি। অনেকবার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় আমার মায়ের শরীরে পেসমেকার বাসানো হয়েছে। আমরা অনেক আনন্দিত।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হৃদরোগে আক্রান্ত অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে হার্টের ভাল্ব, রিং ও পেসমেকার কিনতে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালকে আর্থিক অনুদান দেন। এসব চিকিৎসা সরঞ্জামের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এককালীন ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ২২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার কাছ থেকে অনুদানের চেক নেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন।
বিনামূল্যে গরিব রোগীদের শরীরে ভাল্ব, রিং ও প্রেসমেকার বাসনোর বিষয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক মীর জামাল উদ্দিন বলেন, ‘গরিব রোগীদের জন্য পেসমেকার, হার্টের রিং ও ভাল্ব প্রতিস্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুদানের টাকায় ১৫০টি পেসমেকার, ১৫০টি হার্ট রিং ও ১৫০ টি ভাল্ব কিনতে পারবো।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিশেষ এ অনুদানের টাকায় চারজন রোগীর শরীরে বিনামূল্যে হার্টের রিং প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বিনামূল্যে গরিব রোগীদের এমন চিকিৎসা চলমান থাকবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সৌজন্যে-জাগো নিউজ
Discussion about this post