হার্টবিট ডেস্ক
আজ রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে দ্বিতীয় জাতীয় কুষ্ঠ সম্মেলন-২০২৩ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কুষ্ঠ রোগ যে নির্মূল করা সম্ভব, তা বাংলাদেশ করে দেখাচ্ছে। কুষ্ঠরোগিদের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করতে ওষুধ উৎপাদনকারীদের সঙ্গে সরকার কাজ করবে। কুষ্ঠরোগিরা সমাজেরই অংশ, প্রতিবন্ধীরাও তাই। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও তাই। তাদের সমাজের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেডিক্যাল সায়েন্সে গবেষণায় বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে, এদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রোগব্যধির বিষয়টিও এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে।
এ ধরণের সম্মেলনের মাধ্যমে কুষ্ঠরোগ নির্মূলের কাজ আরও বেগবান হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুষ্ঠ রোগের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কুষ্ঠ নিয়ে কুসংস্কার থেকে বাংলাদেশ অনেকখানি বের হয়েছে। পুরোপুরি বের না হওয়া পর্যন্ত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে কুষ্ঠরোগিদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের আহবান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কুষ্ঠরোগের জটিলতা বিষয়ে চিকিৎসার জন্য নির্মিত বিশেষায়িত সাব হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে ‘Efforts to ZERO Leprosy by 2030’ অর্জনের লক্ষে জাতীয় কুষ্ঠ কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে তহবিল বৃদ্ধিসহ সব ধরনের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোকে কুষ্ঠরোগের বিশেষায়িত ওষুধ তৈরি করে বিনামূল্যে রোগীদের মধ্যে বিতরণের আহবানও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অবহেলা নয়, আসুন ভালবাসা, মমতা আর স্নেহ দিয়ে কুষ্ঠ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সমাজের মূলধারায় নিয়ে আসি, তাদের জীবনকে অর্থবহ এবং আনন্দময় করে তুলি।
২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কুষ্ঠ রোগ নির্মূলে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যাতে প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে ওঠে, তার জন্য প্রাইভেট হাসপাতালের সব যন্ত্রপাতির ওপর ট্যাক্স, বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসার জন্য ট্যাক্স একেবারে শূন্য করে দেই। বেসরকারি উদ্যোক্তা যাতে সৃষ্টি হয় সেজন্য তাদের উৎসাহিত করি। তাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আমরা করে দেই। যার জন্য সারা বাংলাদেশে প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা পোলিও নির্মূল করেছি। মা ও শিশুর মৃত্যুহার হ্রাস করেছি। টিকাদানে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছি। টিকাদান কার্যক্রম সারা বিশ্বেই প্রশংসিত হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অনেক উন্নত দেশ হিমশিম খেয়েছে, আমরা যথাযথ তড়িৎ পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে, করোনা মোকাবিলায় সবকিছু বিনা পয়সায় করে দিয়েছি। সেখানে আমরা যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক করবো সেই পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। প্রায় দশ হাজারের মতো ক্লিনিক আমরা নির্মাণ করি, এর মধ্যে ৪০০০ চালু করি। এক বছরের মধ্যে এর সাফল্য প্রায় ৭০ ভাগ। মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, জাপানের নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইয়োহেই সাসাকাওয়া, স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
Discussion about this post