হার্টবিট ডেস্ক
পুরুষের দেহের রহস্যময় ওয়াই ক্রোমোজোম নিয়ে সুখবর দিলেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম মানবদেহের ওয়াই ক্রোমোজোমের সম্পূর্ণ ক্রম (সিকোয়েন্স) উন্মোচন করেছেন তারা। পুরুষের বন্ধ্যাত্ব কাটাতে এই গবেষণা দারুণ কাজে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
একজন মানুষের প্রতিটি কোষে বা দেহকোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। এর মধ্যে দুটি সেক্স ক্রোমোজোম। একটি ওয়াই এবং অন্যটি এক্স ক্রোমোজোম। সাধারণত বাবার ক্রোমোজোমেই নির্ধারিত হয় সন্তান ছেলে হবে না কি মেয়ে। প্রতিটি পুরুষের থাকে একটি ওয়াই ও একটি এক্স ক্রোমোজোম। আর নারীর থাকে দুটি এক্স ক্রোমোজোম।
সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় যদি পুরুষের ওয়াই ক্রোমোজোম অংশ নেয়, তাহলে সন্তান ছেলে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। না হলে মেয়ে হয়। এ ছাড়া এই ওয়াই ক্রোমোজোম পুরুষের দেহে শুক্রাণু উৎপাদনসহ প্রজননের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নেয়। এ কারণে ওয়াই ক্রোমোজোমের নিষ্ক্রিয়তায় একজন পুরুষ সন্তান জন্মদানে অক্ষম হয়ে যেতে পারেন। এ ছাড়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্যানসারের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে এই ক্রোমোজোম। মানুষের জেনেটিক কোড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০ বছর আগেই এসব ক্রম ও ব্লক বের করে ফেলেছিলেন তারা। কিন্তু কিছু কাজ অসম্পূর্ণ থেকেই যায়। ২০২২ সালে সেই কাজেই হাত দেন বিশ্বের ১০০ বিজ্ঞানী।
তবে সবচেয়ে ছোট ও জটিল ওয়াই ক্রোমোজোমের সিকোয়েন্স বের করা যায়নি। এবার সেই কাজটিই শেষ করলেন ১০০ জনের দলটি। বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী নেচারে এ গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকদের মতে, ওয়াই ক্রোমোজোম মানব জিনোমের সবচেয়ে ছোট এবং দ্রুত ক্রমবর্ধমান ক্রোমোজোম। কিন্তু এর ক্রম না জানার কারণে ঐতিহ্যগতভাবে মানব রোগের অনেক গবেষণা থেকে এতদিন বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে এবার ওয়াই ক্রোমোজোমের পূর্ণাঙ্গ পাঠোদ্ধারের ফলে প্রজনন সম্পর্কিত গবেষণাসহ এর ব্যবহারিক প্রয়োগ সম্ভব হবে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকদের একজন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার মনিকা চেকোভা বলেন, কয়েক বছর আগেও এটি সম্ভব হয়নি। এবার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যা করা হয়েছে, তা অবিশ্বাস্য। -সিএনএন
Discussion about this post