হার্টবিট ডেস্ক
ওমেগা-৩ হলো এক ধরনের অসম্পৃক্ত চর্বি বা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড নামে পরিচিত।
সম্পৃক্ত চর্বি হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। তেল-চর্বিযুক্ত খাবার একটা বয়সের পর সে কারণে খেতে মানা। কিন্তু অসম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খেতে বাঁধা নেই, বরং এটি রক্তে উপকারী চর্বির পরিমাণ বাড়ায় এবং দেহের নানা উপকার করে।
মানবদেহে খাবারের বিপাকক্রিয়া ও শরীর সুস্থ রাখতে ওমেগা–৩ চর্বির বিকল্প নেই। প্রদাহ কমাতে, অপ্রয়োজনীয় রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিহত করতে, ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এই খাদ্য উপাদান বিশেষ প্রয়োজনীয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, আমাদের মস্তিষ্কের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগই ফ্যাটি এসিড। সেল মেমব্রেন, হরমোন, সিগনালিং ম্যাসেঞ্জার প্রভৃতি তৈরিতে ফ্যাটি অ্যাসিডের গুরুত্ব অনেক। উপকারী এই ফ্যাটি অ্যাসিডকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন বিজ্ঞানীরা- বেশি প্রয়োজনীয় ও স্বল্প প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড। বেশি প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড বেশিরভাগ মানুষের শরীর নিজে নিজে তৈরি করতে পারে না। খাবারের থেকে গ্রহণ করতে হয়। বেশি প্রয়োজনীয় একটি ফ্যাটি অ্যাসিড হলো, ওমেগা-৩। স্বল্প প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর নিজেই তৈরি করতে পারে।
প্রায় সব মাছেই কম বেশি ওমেগা–৩ থাকে। রুই, পাংগাস এবং ইলিশ মাছে কম পরিমাণে ওমেগা-৩ থাকে। সবচেয়ে বেশি থাকে সামুদ্রিক মাছে। বিভিন্ন ধরনের বাদামে আছে ওমেগা-৩। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আছে ওয়ালনাট বা আখরোট, পেস্তা ইত্যাদি বাদামে। শাকসবজি যেমন পালং শাক, ব্রকলি ইত্যাদিতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে।
উদ্ভিজ্জ তেল যেমন- তিসির তেল ও ক্যানোলা অয়েল ইত্যাদিতে পাওয়া যায় ওমেগা-৩। সয়াবিন তেলেও রয়েছে এই ফ্যাটি অ্যাসিড।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সপ্তাহে অন্তত দুবার ওমেগা-৩–সমৃদ্ধ মাছ খাওয়া উচিত। প্রতিবার আট আউন্স বা প্রায় ২৫০ গ্রাম পরিমাণ মাছ খেতে হবে। মাছ না ভেজে গ্রিল করে কিংবা হালকা আঁচে রান্না করে খেলে মাছের তেলে অপরিবর্তিত ওমেগা–৩ পাওয়া যায়।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন হৃদ্যন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের জন্য সবাইকে সপ্তাহে অন্তত দুদিন ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
অনেকে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ওমেগা-৩ সেবন করেন। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার থেকে ওমেগা-৩ গ্রহণ করলে সাপ্লিমেন্ট সেবনের প্রয়োজন নেই। সাপ্লিমেন্ট সেবনে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তা সেবন করা উচিত নয়। বিশেষ করে হৃদ্রোগের ঝুঁকি থাকলে, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি থাকলে অথবা হৃদ্রোগীদের এ ধরনের সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
Discussion about this post