হার্টবিট ডেস্ক
২০২৩ সাল থেকে চট্টগ্রাম লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটালে এমএলওপি এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সাবস্পেশালিটি ফেলোশিপ কোর্স চালু করা হবে। এ ছাড়া জুলাই থেকে ডিপ্লোমা ইন অফথালমোলজি কোর্স পরিচালনায় প্রস্তুতিও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) জাকির হোসেন সড়কের লায়ন্স হসপিটালের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক চট্টগ্রাম জেলা গভর্নর লায়ন নাসিরউদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
চক্ষুবিষয়ক উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চট্টগ্রাম লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অনুমোদন লাভ করায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
নাসিরউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আই ক্যাম্প (চক্ষুশিবির), স্কুল সাইট স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম ও পারিবারিক স্বাস্থ্য পুষ্টি এবং শিক্ষা প্রকল্প সিটি সেন্টারে আধুনিক মানের হাসপাতাল-এই সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশন ১৯৬৩ সাল থেকে সমগ্র চট্টগ্রাম বিভাগে অন্ধত্ব বিমোচন, দূরীকরণ ও চক্ষুরোগের চিকিৎসা পরিচালনা করে আসছে। সেবামূলক কার্যক্রমক আরো আধুনিক, উন্নত ও প্রসারিত করতে ২০১৭ সালে লায়ন্স ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ এ হাসপাতালকে একটি রিজিওনাল সেন্টার অব এক্সেলেন্স মানে উত্তীর্ণ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সে অনুযায়ী অবকাঠাগোগত উন্নয়ন করা হয়। যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবল সমৃদ্ধ করে সাবস্পেশালিটি সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়। মিডলেবেল, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ও সবস্পেশালিটিসহ বিভিন্ন কোর্স চালু করতে ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের এই অগ্রযাত্রায় এই সরকারি অনুমোদন অর্জন একটি বিশাল মাইলফলক, কারণ এর মাধ্যমে এই ইনস্টিটিউট এখন থেকে চক্ষু বিষয়ক উন্নত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। এই এলাকায় বিশ্বমানের আধুনিক চক্ষুসেবা প্রদানে, অন্ধত্ব বিমোচন ও দূরীকরণের কার্যক্রম এবং সাশ্রয়ীমূল্যে মানুষের দোরগোড়ায় চক্ষুসেবা পৌঁছে দেওয়ার যে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি, এই অর্জন সেই প্রচেষ্টাকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নেবে। আরেকটি বিষয় হলো-চক্ষুসেবা কার্যক্রমে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও প্যারামেডিকসহ সব ধরনের কার্যক্রমে নারীরাই সর্বত্র এগিয়ে। এক্ষেত্রে বৃহত্তর চট্টগ্রামে একটা প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। এ ইনস্টিটিউটের সূচনা সেটা কাটিয়ে উঠতে অনেকটাই সহায়তা করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লায়ন নাসিরউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের এই হসপিটাল থেকে অসংখ্য গরিব রোগী সেবা নিয়েছেন। এখনো আপনারা যদি প্রয়োজন মনে করেন, কোনো গরিব রোগী টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না, আপনারা আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এখন চিকিৎসক তৈরির জন্য আমরা আই ইনস্টিটিউট করেছি। এখানে আমরা চাইলেও বাণিজ্য করতে পারবো না। আমাদের কোর্সগুলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমই¦উ) অধীনে পরিচালিত হবে। ওনারা আমাদের যতজন ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করতে বলবে, আমরা ঠিক ততজনই ভর্তি করতে পারবো।
চট্টগ্রাম লায়ন্স আই হসপিটালের একাডেমিক ডিরেক্টর লায়ন অধ্যাপক ডা. প্রকাশ কুমার চৌধুরী বলেন, লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট থেকে দক্ষ চিকিৎসক তৈরি হবে। এখানে এমএলওপি কোর্স থাকবে। এ ছাড়া ডিও, এমএস, বি-অপটম, ফেলোশিপ ট্রেনিং ও ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাকাল্টি সার্জিক্যাল ট্রেনিং থাকবে। আমাদের হসপিটালে রয়েছে বিশ্বের সেরা ফ্যাকো মেশিন। অন্যান্য আধুনিক যন্ত্রপাতি তো রয়েছে। এখানে অনেক বড় বড় অপারেশন হচ্ছে। লায়ন্স হসপিটাল শুধু গরিবদের জন্য নয়, এখানে ধনীরা আসতে পারেন। সবার জন্য রয়েছে একই রকম সেবা। আমরা বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ মেরিন সিটির সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি করেছি। যেটার মাধ্যমে ওখানকার ছাত্রছাত্রীরা আমাদের অপারেশন থিয়েটারে এসে প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন।
চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট সেক্রেটারি লায়ন এসএম আশরাফুল আলম আরজুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক ও সাবেক চট্টগ্রাম জেলা লায়ন গভর্নর এমএ মালেক, সাবেক চট্টগ্রাম জেলা লায়ন গভর্নর ও চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন কামরুন মালেক, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল জেলা ৩১৫বি৪ এর দ্বিতীয় ভাইস জেলা গভর্নর লায়ন কোহিনূর কামাল, চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের সাবেক চেয়ারম্যান লায়ন নাজমুল হক চৌধুরী, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল জেলা ৩১৫বি৪ সাবেক গভর্নর লায়ন মো. মোস্তাক হোসাইন, সাবেক গভর্নর লায়ন সিরাজুল হক আনসারি, চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি লায়ন ডা. দেবাশীষ দত্ত, ট্রেজারার লায়ন এস জোহা চৌধুরী।
Discussion about this post