হার্টবিট ডেস্ক
ক্যাপসিকামের আর একটি নাম হল বেল পেপার।এটি একটি স্বাস্থ্যকর খাবার।এটি শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।ক্যাপসিকাম স্বাস্থ্য এর জন্য কতটা উপকারী তা দেখেনিন ।
প্রতি ১০০ গ্রাম ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ:-
প্রোটিন৮৬০মিলিগ্রাম,কার্বোহাইড্রেট৪.৬ গ্রাম,চর্বি ১.৭০ মিলিগ্রাম,ভিটামিন-সি৮০ মিলিগ্রাম,ভিটামিন-এ৩৭০ আইইউ।এছাড়াও ভিটামিন-ই,ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি৬,থায়ামিন,লেবোফ্লেবিস ও ফলিক এসিড অল্প মাত্রায় আছে।
খনিজ উপাদান
ক্যালসিয়াম১০ মিলিগ্রাম,আয়রন ৩৮০ মিলিগ্রাম,পটাশিয়াম ১৭৫ মিলিগ্রাম ও ফসফরাস ২০ মিলিগ্রাম।এছাড়াও অল্প মাত্রায় আছে জিংক, কপার,ম্যাঙ্গানিজ ও ফ্লোরাইড।
ক্যাপসিকামের উপকারিতা:-
১: লাইকোপিন প্রোস্টেট ক্যানসার, সার্ভিক্যাল ক্যানসার ও ওভারিয়ান ক্যানসার রোধ করতে সাহায্য করে।
২: এতে আছে অ্যালকালোয়েড, ফ্লেবোনয়েড,ক্যানিন ইত্যাদি। অ্যালকালোয়েড অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রূপে কার্যকর।ক্যানিন আন্ত্রিক রোগের চিকিৎসা ব্যবহার করা হয়।
৩: ক্যাপসিকাম ওজন হ্রাস করে।
৪: এতে আছে ক্যাপসিসিন।যা কোলেস্টেরল এর পরিমাণ ও ট্রাইগ্লিসারাইড হ্রাস করে।এছাড়াও যে ব্যাকটেরিয়া আলসার সৃষ্টি করে তাকে ধ্বংস করে।
৫: যেসব ব্যক্তিদের আয়রনের অভাব আছে তারা নিয়মিত লাল ক্যাপসিকাম খান।এটি আয়রন এর অভাব পূরণ করবে।
৬: এতে আছে ভিটামিন সি।যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাহায্য করে এবং শক্ত কোলাজেন সৃষ্টি করে যাতে ত্বক ও জয়েন্ট ভালো থাকে ও আরথ্রাইটিস রোধ করতে সাহায্য করে।
৭: এতে আছে ভিটামিন-এ।যা চোখের জন্য খুব ভাল।এতে লুটেইন নামক ক্যারোটিন আছে।যা চোখের মাস্কুলার ডিজেনারেশন এর ঝুঁকি হ্রাস করে।
৮: লাল ক্যাপসিকাম আছে লাইকোপিন।যা হার্টের জন্য খুব ভাল।আর সবুজ ক্যাপসিকাম কোলেস্টেরল হ্রাস করতে সাহায্য করে। হোমোসিস্টেইন বেড়ে হার্টের মারাত্বক ক্ষতি হয়।
৯: সবুজ ক্যাপসিকাম আছে প্রচুর মাত্রায় সিলিকন যা চুল ও নখের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
১০: লাল ক্যাপসিকাম চুল বৃদ্ধি করে,চুল পড়া কমায়।
১১: ডায়াবেটিস নিয়িন্ত্রণ করতে কার্যকর,হজমে সাহায্য করে,ত্বক পরিষ্কার রাখে,মাইগ্রেন, সাইনাস,ইনফেকশন,দাঁতে ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ইত্যাদি ব্যথা দূর করতে কাজ করে।সি সিকনেস, ম্যালেরিয়া, জ্বর ইত্যাদি রোধে ক্যাপসিকাম বেশ কার্যকর।এতে আছে ভিটামিন-সি যা মস্তিষ্কের টিস্যুকে পুনরুজ্জীবিত করে,দেহের হাড়কে সুগঠন করে,এটি বার্ধক্যজনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে।
কোন রঙের ক্যাপসিকাম বেশি উপকারী?
হলুদ ক্যাপসিকাম:-
হলুদ ক্যাপসিকামে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি ফ্রি রেডিকেলে সঙ্গে লড়াই করে এবং সেল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রোধ করতে সাহায্য করে।এই ক্যাপসিকামে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার যা দেহের টক্সিন বের করে দেয়।এটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে।এছাড়াও হজমশক্তি বৃদ্ধি করে,কোলেস্টেরল হ্রাস করে,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেএবং উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে।
সবুজ ক্যাপসিকাম:-
সবুজ ক্যাপসিকাম ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে,সাইনাস,মাইগ্রেন, ইনফেকশন, দাঁতে ব্যথা,অস্টিওআর্থ্রাইটিস ইত্যাদি ব্যথা দূর করতে কাজ করে,সংক্রমণ রোধ করে, শরীরের বাড়তি ক্যালরি পূরণে কাজ করে। ফলে চর্বি জমে না এবং ওজনও বৃদ্ধি পায় না।
লাল ক্যাপসিকাম:-
লাল ক্যাপসিকামে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে।ত্বকের ব্রণের হাত থেকে রক্ষা করে,ত্বক সুন্দর রাখে,নতুন চুল গজাতে সাহায্যকরে,চোখ ভালো রাখে, খনিজের অভাব পূরণ করে।
সব ধরনের ক্যাপসিকামে পুষ্টিগুণ আছে কিন্তু তুলনামূলক ভাবে লাল ক্যাপসিকামে বেশি পুষ্টিগুণসম্পন্ন।নিয়মিত খাবার যদি যে কোন ক্যাপসিকাম খান তাহলে বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন।
ক্যাপসিকামের অপকারিতা:-
১:যেসব ব্যক্তির বিভিন্ন খাবারে অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের ক্যাপসিকামেও যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে তাদের ক্যাপসিকাম না খাওয়াই ভাল।
২:সব খাবার পরিমাণ অনুযায়ী খাওয়া উচিত কিন্তু বেশি পরিমাণ খেলে নানা সমস্যা দেখা দেবে সেই রকম ক্যাপসিকাম যদি বেশি খান তাহলে বমি ভাব,ডায়রিয়া, হাত-পায়ে জ্বালা ভাব,পেট ব্যাথা,বদহজম, প্রচন্ড হাঁচি ইত্যাদি এই সব সমস্যা দেখা দেয়।
ক্যাপসিকাম খাওয়ার নিয়ম:-
ক্যাপসিকাম রান্না করলে খুব তাপে রান্না না করাই ভাল এতে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।সালাদ হিসেবে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়।নিয়মিত একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ১টি ক্যাপসিকাম এর অর্ধেক খাওয়া উচিত।
Discussion about this post