হার্টবিট ডেস্ক
ওষুধ ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আজ রোববার (৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুন নেসা খানের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট ১৯৭২-অনুযায়ী, দ্বিতীয়ত-যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, তৃতীয়ত- ১৪ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করা হয় সেটা আমরা জানি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়, একদম হয় না তা বলব না। আমাদের দেশে প্রায় ৯৮ শতাংশ ওষুধ তৈরি হয় এবং প্রায় ৬৩টি দেশে তা রপ্তানি করা হচ্ছে। তবে ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ প্রশাসন কাজ করে। নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত রোধে তাদের নানা ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।’
ভেজাল ওষুধে রোগীর কিডনি বিকল হতে পারে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ওষুধে ভেজাল হলে রোগী মৃত্যুমুখে পতিত হবে তো বটেই। শুধু তাই না রোগীর কিডনি বিকল হওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে। এটির প্রতিরোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, সরকার ওষুধে ভেজালকারীদের অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করে ‘দি ড্রাগস অ্যাক্ট-১৯৪৮, ড্রাগস অর্ডিন্যান্স-১৯৫৮ রহিতকল্পে ওষুধ আইন-২০২২ এ একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। যা মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদিত হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’
এ আইনের ধারাগুলো হলো- ‘যারা লাইসেন্স ব্যতীত ওষুধ উৎপাদন করবে তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা রাখা হয়েছে। লাইসেন্স ব্যতীত ইন্টারনেটে বা যে কোনোভাবে ওষুধ বিক্রি করে তার জন্য পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ও পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা আছে। আর যদি লাইসেন্স ব্যতীত ওষুধ আমদানি করে তার জন্য ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।’
তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত ওষুধ প্রশাসন দ্বারা ড্রাগ কোর্টে ১০১টি মামলা করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ৩০০টি এবং মোবাইল কোর্টে প্রায় আট হাজারটি মামলা হয়েছে। প্রায় ৩৬ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর প্রায় ২০০ জনের কারাদণ্ড হয়েছে। প্রায় ৮০ কোটি টাকার ওষুধ জব্দ করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ঔষধ প্রশাসনকে শক্তিশালী করার জন্য জনবল কাঠামো বাড়িয়ে ৩‘শ থেকে এক হাজারে উন্নীত করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় ড্রাগ ইন্সপেক্টর আছে, তারা এগুলো সব সময় পর্যবেক্ষণ করছেন। ফার্মেসিগুলো ভিজিট করেন। ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনাসহ বেশ কয়েকটি শহরে ল্যাব আছে। সেখানে বাজার থেকে ওষুধ এনে পরীক্ষা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে ভেজাল ওষুধ তৈরির জন্য ২০টি কারখানা সিলগালা করা হয়েছে, তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে ভেজাল ওষুধ তৈরি, বিক্রি, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, ভেজাল ওষুধ আমদানি রোধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
Discussion about this post