হার্টবিট ডেস্ক
মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা না মানায় ঢাকার মোহাম্মদপুরে বেসরকারি কেয়ার মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন বাতিল করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব মাহবুবা বিলকিস স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নীতিমালা অনুসরণ না করার পাশাপাশি ‘মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজ পরিচালনায় অপারগতা স্বীকার করায়’ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অনুমোদন সংক্রান্ত জটিলতা ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে কলেজটিতে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়নি। বর্তমানে এ কলেজে বিভিন্ন বর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছেন।
এ কলেজের শিক্ষার্থীরা গত অগাস্টে বিএমডিসি’র অনুমোদন না থাকা এবং একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় মাইগ্রেশনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল।
শিক্ষার্থীদের ওই আন্দোলনের সময় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) ডা. একেএম আহসান হাবিব গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, কেয়ার মেডিক্যালের শিক্ষার্থীরা অন্য কলেজে ‘মাইগ্রেট’ করতে পারবেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর আগেও কলেজটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল। মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা মেনে না চলায় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে কলেজটির একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল যা নিয়ে পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে গিয়েছিল।
কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের আদেশের অনুলিপিটি বুধবারই কেয়ার মেডিক্যাল কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা না মানায় ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে কেয়ার মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখা হয়। তবে উচ্চ আদালতে রিট করে কলেজের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই রিট পিটিশনটি গত ২৭ জুলাই প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অপরদিকে, অনুমোদন স্থগিতাদেশের পর গত পাঁচ বছরে কর্তৃপক্ষ কলেজটির মানোন্নয়ন করতে পারেনি। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পায়। ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নবায়ন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও অনুমোদন দেয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করায় বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজটি। তবে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১১ এর বাস্তবায়নের শর্ত পূরণ না হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কেয়ার মেডিক্যাল কলেজে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ হাই কোর্টে রিট আবেদন করে। এতে সাময়িক বন্ধের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। এর ভিত্তিতে ২০১৭-১৮ থেকে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এইসব শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন পেয়ে এমবিবিএস কোর্সে পড়াশুনা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন না পাওয়া ও তালিকাভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ করতে পারছেন না।
Discussion about this post