হার্টবিট ডেস্ক
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই। কেননা, এর কোনো ভ্যাকসিন নেই, সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর ওষুধও নেই। তবে মশার প্রজননের অনুকূল পরিবেশ আমাদের চারপাশে আছে। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ভিশন মসকিউটো ব্যাট নিবেদিত “ডেঙ্গু সতর্কতা” ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে।
ডেঙ্গু কী? কেন হয় ও কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়- তা সকলের সামনে তুলে ধরতে এই ক্যাম্পেইন আয়োজন করেছে ভিশন মশা মারার ব্যাট। ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ক্যাম্পেইন দেশব্যাপী চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) ‘ভিশন’ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সরকারি হিসেবে ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হন এবং ১০৫ জনের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ইতোমধ্যে ৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিনিয়ত হাসপাতালে আসছে ডেঙ্গু রোগী। এমন পরিস্থিতিতে সচেতনতার ফলে যদি একটি প্রাণও রক্ষা পায়, তা-ই হবে ভিশন পরিচালিত ক্যাম্পেইনের সার্থকতা।
ডেঙ্গুর কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায় সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। নিচে তা উল্লেখ করা হলো-
ডেঙ্গু জ্বরের কারণ ও লক্ষণ
• ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাসের মাধ্যমে। এই ভাইরাসবাহিত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়ে থাকে।
• ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে তিনি চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত হন।
• এবার এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো এডিস মশা কামড়ালে সেটি ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে।
• ডেঙ্গু ভাইরাস চার ধরনের হয়। তাই ডেঙ্গু জ্বরও চারবার হতে পারে।
• তবে যারা আগেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে রোগটি হলে সেটি মারাত্মক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
• ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্র জ্বর ও সেই সঙ্গে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। জ্বর ১০৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা হয়। এছাড়া মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়। অনেক সময় ব্যথা এত তীব্র হয় যে, মনে হয় হাড় ভেঙে যাচ্ছে। তাই এই জ্বরের আরেক নাম ‘ব্রেক বোন ফিভার’। জ্বর হওয়ার চার বা পাঁচ দিনের সময় শরীরজুড়ে লালচে দানা দেখা যায়। যাকে বলা হয় স্কিন র্যাশ, অনেকটা অ্যালার্জি বা ঘামাচির মতো। এর সঙ্গে বমি বমি ভাব এমনকি বমি হতে পারে। রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করে ও রুচি কমে যায়।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী সাধারণত পাঁচ থেকে ১০ দিনের মধ্যে নিজে নিজেই ভালো হয়ে যান, এমনকি কোনো চিকিৎসা না করালেও। তবে রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই চলতে হবে, যাতে ডেঙ্গুজনিত কোনো মারাত্মক জটিলতা না হয়। ডেঙ্গু জ্বরটা আসলে একটা গোলমেলে রোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়। এছাড়া-
• সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতে হবে।
• যথেষ্ট পরিমাণে পানি, শরবত, ডাবের পানি ও অন্যান্য তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। খেতে না পারলে দরকার হলে শিরাপথে স্যালাইন দেয়া যেতে পারে।
• জ্বর কমানোর জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ যথেষ্ট। এসপিরিন বা ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ব্যথার ওষুধ কোনোক্রমেই খাওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়বে।
• জ্বর কমানোর জন্য ভেজা কাপড় দিয়ে গা মোছাতে হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায়
ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের মূলমন্ত্রই হলো এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেন কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা। মনে রাখতে হবে, এডিস একটি ভদ্র মশা, অভিজাত এলাকায় বড় বড় সুন্দর সুন্দর দালান-কোঠায় বসবাস করে। স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে এই মশা ডিম পাড়ে। ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পানি এদের পছন্দসই নয়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী স্থানগুলোকে পরিষ্কার রাখতে হবে এবং একই সঙ্গে মশক নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সেইসঙ্গে-
• বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
• ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলতে হবে, যাতে তাতে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়তে না পারে। ব্যবহৃত জিনিস যেমন- মুখ খোলা পানির ট্যাংক, ফুলের টব ইত্যাদিতে যেন পানি জমে না থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
• ঘরের বাথরুমে কোথাও জমানো পানি পাঁচ দিনের বেশি যেন না থাকে। অ্যাকুরিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ার কন্ডিশনারের নিচেও যেন পানি জমে না থাকে।
• এডিস মশা সাধারণত সকাল ও সন্ধ্যায় কামড়ায়। তবে অন্য সময়ও কামড়াতে পারে। তাই দিনের বেলা শরীর ভালোভাবে কাপড়ে ঢেকে বের হতে হবে। প্রয়োজনে মসকুইটো রিপেলেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরের চারদিকে দরজা জানালায় নেট লাগাতে হবে।
• দিনে ঘুমালে মশারি টাঙিয়ে অথবা কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমাতে হবে।
• যে সকল বাচ্চারা স্কুলে যায় তাদের হাফপ্যান্ট না পরিয়ে ফুল প্যান্ট বা পায়জামা পরিয়ে স্কুলে পাঠাতে হবে।
• ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে অবশ্যই সব সময় মশারির মধ্যে রাখতে হবে, যাতে রোগীকে কোনো মশা কামড়াতে না পারে। মশক নিধনের জন্য স্প্রে, কয়েল, ম্যাট ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহার করতে হবে।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মশা থেকে দূরে থাকতে হবে। ঘরের মশা মারতে ব্যবহার করা যেতে পারে ‘ভিশন মশা মারার ব্যাট’। এই লিংকে ক্লিক করে (vision.com.bd/home-appliance/mosquito-killing-bat) অনলাইন থেকে সহজেই ব্যাটটি কেনা যায়। এছাড়া কেনা যায় বেস্ট বাই এবং ভিশন এম্পোরিয়াম শোরুম থেকেও।
ভিশন মশা মারার ব্যাট ব্যবহারের ফলে ধোঁয়া ও গন্ধ হয় না। ফলে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ থেকে নিরাপদ থাকা যায়। ভিশন মশা মারার ব্যাটে উন্নত ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়, তাই এক চার্জে দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও ব্যবহার পদ্ধতি খুব সহজ হওয়ায় যে কেউ এটি ব্যবহার করতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
Discussion about this post