হার্টবিট ডেস্ক
২০১৮ সালে চালু হওয়ার পর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কমিউনিটি ভিশন সেন্টার থেকে সারা দেশে অন্তত ১২ লাখ চক্ষুরোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে সারা দেশে ৮টি বেইজ সেন্টারের মাধ্যমে ১৩৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। আগামী বছরের মধ্যে এই সংখ্যা ২০০-এ উন্নীত করতে চায় সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা এসব কথা জানান।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির আওতায় ন্যাশনাল আই কেয়ার অপারেশনাল প্ল্যানের একটি কার্যক্রম উপজেলা কমিউনিটি ভিশন সেন্টার। এই সেন্টারের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ডিজিটাল প্রযুক্তিতে অর্থাৎ ভিডিও কনফারেন্সিং ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজ জেলায় অবস্থিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অথবা বিশেষায়িত হাসপাতালের (যা বেইজ সেন্টার নামে পরিচিত) অভিজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিতে পারবেন।
চোখের বিশেষ অপারেশনের জন্য রোগীদের কমিউনিটি ভিশন সেন্টার থেকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে জেলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অথবা বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে দেশে ৮টি বেইজ সেন্টারের অভ্যন্তরে ১৩৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার চালু রয়েছে। বেইজ সেন্টারের চারপাশে বিশ থেকে ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে ১৫-২০টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার স্থাপন করা হয়।
এ বিষয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বর্তমানে সারা দেশে ৮টি বেইজ সেন্টারের মাধ্যমে ১৩৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। এখান থেকে প্রতিদিনই রোগীরা সেবা নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ১২ লাখ লোক কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন। আগামী বছরের মধ্যে এই কমিউনিটি ভিশন সেন্টার দুইশ’তে উন্নীত করবো। ধাপে ধাপে সারা দেশে প্রত্যেক উপজেলায় এই কমিউনিটি ভিশন সেন্টার স্থাপন করা হবে।
কমিউনিটি ভিশন সেন্টার সংশ্লিষ্টরা জানান, শহরের আধুনিক চোখের চিকিৎসা এখন বিনামূল্যে উপজেলায়ও পাওয়া যায়। ফলে চোখের সমস্যা নিয়ে জেলা বা শহরে যাওয়ার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না দেশের প্রান্তিক জনগণকে।
ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, সরকারের অন্যতম প্রশংসনীয় উদ্যোগ এটি। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী খুব সহজেই চক্ষু চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রতিবেশী দেশগুলো এখনও আমাদের মতো সফলতা পায়নি।
কমিউনিটি ভিশন সেন্টারে যেসব সেবা দেওয়া হয়:
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের জন্য একটি রুম বরাদ্দ থাকে। সেখানে চোখের রোগীরা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাসহ সমন্বিত উন্নত চিকিৎসা সেবা পায়। এরমধ্যে রয়েছে ছানি, গ্লুকোমা, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, শিশু চক্ষুরোগ, চোখের আঘাতসহ অন্যান্য জটিল চক্ষুরোগ শনাক্তকরণ। এছাড়া টেলি-কনসালটেশনের মাধ্যমে বেইজ সেন্টারে কর্মরত চক্ষু বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিয়ে রেফারেলের মাধ্যমে বেইজ সেন্টারে এসে রোগীরা অপারেশন ও প্রয়োজনীয় ইনভেস্টিগেশন করতে পারবে। কমিউনিটি ভিশন সেন্টারে সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে ওষুধসহ পাওয়ার চশমা প্রদানও করা হয়। কমিউনিটি ভিশন সেন্টারে রোগীদের চিকিৎসায় যেসব আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে তার মধ্যে স্লিটল্যাম্প, অটোরিক্সাক্টোমিটার (চোখের পাওয়ার মাপার যন্ত্র), ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি এবং গ্লুকোমা রোগ নির্ধারণের জন্য ফান্ডাস ক্যামেরা, চোখের প্রেসার মাপার যন্ত্র, অপথালমোস্কোপ ও রেটিনোস্কোপ উল্লেখযোগ্য।সৌজন্যে-বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post