হার্টবিট ডেস্ক
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনও কারণ পাওয়া না গেলেও শতকরা ৫-১০ জনের ক্ষেত্রে কারণ নির্ণয় করা যায় এবং তাদের রোগ পূর্ণ নিরাময়যোগ্য বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ব্লক মিলনায়তনে উচ্চ রক্তচাপ ও হাইপার এল্ডোস্টেরনিজম বিষয়ক সচেতনতা মূলক ‘স্ক্রিনিং ফর প্রাইমারি অ্যালডোসটেরোনিসম : দ্যা লিডিং কস অব সেকেন্ডারি এইচটিএন’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দানের জন্য বদ্ধপরিকর। রোগীদের সেবার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণার গুণগতমান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ ধরনের সেমিনার বেশ ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে হাইপার টেনশন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে হাইপারটেনশনে আক্রান্ত রোগীরা নিজেরাও বুঝতে পারেন না, বুঝলেও সচেতনতার অভাবে তারা দিন দিন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হন। হাইপার টেনশনকে এ কারণে নীরব ঘাতক ব্যাধি বলা হয়ে থাকে। কারণ, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপার টেনশনে লক্ষণ থাকে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনও কারণ পাওয়া না গেলেও শতকরা ৫-১০ জনের ক্ষেত্রে কারণ নির্ণয় করা যায় এবং তাদের রোগ পূর্ণ নিরাময়যোগ্য।
সেমিনারে উঠে আসে, উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের কোনো লক্ষণ থাকে না, তবে অনেক মরণঘাতী রোগের কারণ ঘটায়। যেমন- হার্ট এটাক, হার্ট ফেইলিউর, স্ট্রোক, চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানো, কিডনি ফেইলিউর, রক্তনালির রোগ ইত্যাদি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনও কারণ পাওয়া না গেলেও, শতকরা ৫-১০ জনের ক্ষেত্রে কারণ নির্ণয় করা যায় এবং এই রোগী পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। যাকে সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন বলা হয়। সেকেন্ডারি হাইপারটেনশনের এক তৃতীয়াংশ রোগী হাইপার এল্ডোস্টেরনিজমে আক্রান্ত। যার রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পদ্ধতি আমাদের দেশে এখনো শুরু হয়নি।
সেমিনারে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগ অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে এ সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগ ও এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগ পৃথক উচ্চ রক্তচাপ ক্লিনিকের মাধ্যমে এ রোগীদের বিশেষ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ৩০-৭৯ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর ১.৪% উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, যার দুই তৃতীয়াংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জনগণ। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ৪৫ ভাগই নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
সেমিনারে এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শারমিন জাহান ও হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. ফখরুল ইসলাম খালেদ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুহম্মদ আবুল হাসানাত।
Discussion about this post