হার্টবিট ডেস্ক
যেসব রোগ একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় না, অর্থাৎ ছোঁয়াচে না সেগুলোকে অসংক্রামক ব্যাধি বলা হয়। বিশ্বব্যাপী চারটি প্রধান অসংক্রামক রোগের একটি হলো ডায়াবেটিস। বাংলাদেশের শহর ও গ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন অনুমান করেছে যে, বাংলাদেশে প্রায় ১৩ কোটি এক লাখ মানুষ শরীরে ডায়াবেটিস নিয়ে বসবাস করছেন এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ওষুধের জন্য গত ৬৩ বছর ধরে চিকিৎসকরা সানোফি বাংলাদেশের ওপর আস্থা রেখেছেন। চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে সানোফি বাংলাদেশ সাইনোভিয়া ফার্মা নামে যাত্রা শুরু করেছে। সাইনোভিয়া ফার্মার প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল বাংলাদেশি রোগীদের অপূর্ণ চাহিদা মেটাতে যুগান্তকারী নতুন এবং উদ্ভাবনী সমাধানের। তারই ধারাবাহিকতায় টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের আরও দক্ষতার সাথে গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণের জন্য সাইনোভিয়া ফার্মা সাম্প্রতিকতম SGLT2 ইনহিবিটর আর্টু (আর্টুগ্লিফ্লোজিন) নিয়ে এসেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক এ কে আজাদ খান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক এস এম আশরাফুজ্জামান।
অনুষ্ঠানের সায়েন্টিফিক অংশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট ফোকাসিং অন সিভিডি আউটকাম এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজির প্রফেসর শামীম আহমেদ ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট ফোকাসিং অন রেনাল প্রোটেকশন বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজেসের পরিচালক অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিন, ইউনাইটেড হাসপাতালের অধ্যাপক মো. হাফিজুর রহমান, বারডেমের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ফিরোজ আমিন, বিএসএমএমইউ-এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম, বারডেমের সহযোগী অধ্যাপক ফারিয়া আফসানাসহ বিশেষজ্ঞ প্যানেল দেশের ডায়াবেটিস পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কিত কোমরবিডিটিগুলো পরিচালনায় ওষুধের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা উপস্থাপন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশের ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ডায়াবেটিস পৃথিবীতে মহামারী রুপে দেখা দিয়েছে। তাছাড়া এই রোগ একবার হলে আজীবনের জন্য থেকে যায়। তবে এই রোগ সম্পূর্ণ রুপে নিয়ন্ত্রণে রাখলে সব ধরনের শারীরিক জটিলতা পরিহার করে সুস্থ, স্বাভাবিক ও কর্মঠ জীবনযাপন করা যায়। বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস চিকিৎসার অনেক বৈজ্ঞানিক উন্নতি হয়েছে। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এসজিএলটিটু ইনহিবিটির গ্রুপের ওষুধ। একমি সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসিকে এই গ্রুপের (আর্টুগ্লিফ্লোজিন) ওষুধ বাংলাদেশে সহজলভ্য করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই ওষুধটির মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগ নিয়েও রোগীরা ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক এস এম আশরাফুজ্জামান বলেন, এসজিএলটিটু ইনহিবিটর ভার্টিস-সিভি ট্রায়াল অনুসারে টাইপ টু ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ওষুধের কার্ডিওভাসকুলার নিরাপত্তা মূল্যায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সভাপতির বক্তব্যে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে যে, হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতার জন্য যেসব রোগী আর্টুগ্লিফ্লোজিন ওষুধ ব্যবহার করছেন সেসব রোগীর খুব কম রোগীই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তাছাড়া আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের ৮০তম ভার্চুয়াল সায়েন্টিফিক সেশনে আর্টুগ্লিফ্লোজিনের কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা কার্ডিওভাসকুলার ট্রায়ালের মূল্যায়নের ফলাফল বিষয়ক সিম্পোজিয়ামের সময়ও গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়।
Discussion about this post