ডা. জেসমীন আক্তার লীনা
শিশুদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় সঠিক চিকিৎসা জরুরি। নয়তো রোগ জটিল হয়ে তার দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং মেধার বিকাশ ব্যাহত হতে পারে। এটোপিক ডার্মাটাইটিস ত্বকের একধরনের প্রদাহজনিত সমস্যা। এ রোগ শিশুদের দুই বছর পর্যন্ত বেশি বেশি হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১২ বছর পর্যন্ত রোগটি থাকতে পারে। রোগটিতে বারবার সংক্রমণ যাতে না হয়, সে ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুনের মধ্যে চলতে হবে।
সাধারণ তথ্য
বাবা-মায়ের এই রোগ থাকলে সন্তানদের হতে পারে।এই রোগ সাধারণত বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে হয় এবং শরীরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় হয় বয়সভেদে। আক্রান্ত জায়গায় প্রচুর চুলকানি থাকে।
কেন হয়
শীতে বাতাসের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা কমতে থাকে। এ কারণে এটোপিক ডার্মাটাইটিস হয়। শীতের সময় ঘরে ও বাইরে তাপমাত্রার তারতম্য থাকে। আবার হাত-মুখ ও গোসল করা হয় গরম পানি দিয়ে। তাপমাত্রার এই ওঠানামা ত্বকের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া শীতের সময় আমরা গরম পানি পান করি। অতিরিক্ত চা-কফি পানের কারণে ত্বক পানিশূন্য হয়ে যায়। এই পানিশূন্যতাও এই রোগের কারণ। এটোপিক ডার্মাটাইটিস রোগীদের ত্বক এমনিতেই পানিশূন্য হয়ে যায়। ত্বকের সহনশীলতা অনেক কম থাকে। এসব কারণে শীতের সময় এই রোগের উপসর্গ বেড়ে যায়।
প্রতিকার
- শিশুকে গরম কাপড়ে ঠিকমতো ঢেকে রাখতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময় ফুলহাতা জামাকাপড় পরাতে হবে।
- শিশু বাইরে খেলতে যাওয়ার সময় হাতে-পায়ে লোশন, গ্লিসারিন বা তেল দিয়ে দিতে হবে।
- সাধারণত বয়স্কদের ত্বকে তেল তৈরি করার গ্রন্থি থাকে একটি। কিন্তু শিশুদের এটি নেই। তেল বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াকে ঠেকিয়ে রাখছে। তাই মায়েরা যদি একটু তেল দিয়ে দেন শিশুদের খেলতে যাওয়ার আগে বা বাইরে যাওয়ার আগে, তাহলে ত্বক সুরক্ষিত থাকতে পারে।
- খাবারের ব্যাপারেও কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। দুধ, মাছ-মাংস বা অন্যান্য খাবার খাওয়ার কারণে শিশুর ত্বকে চুলকানি হচ্ছে কি না, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। যদি নির্ধারণ করা যায়, সে ক্ষেত্রে তা এড়িয়ে যেতে হবে।
- এ ছাড়া যে শিশুরা বুকের দুধ খায় না, গরুর দুধ বা কৌটার দুধের ওপর নির্ভর করছে, সেসব শিশুর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
এটি দীর্ঘমেয়াদি অসুখ। যদি দেখা যায় রোগটি দ্রুত ভালো হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে একজন চর্মরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে এবং অয়েনমেন্ট লাগাতে হবে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
চেম্বার: আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিরপুর রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা
Discussion about this post