হার্টবিট ডেস্ক
নাটোরের গুরুদাসপুরে অজ্ঞাত এক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন একই মহল্লার প্রায় ৬০ জন। দেড় বছর ধরে বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে গিয়েও রোগের কোনো প্রতিকার না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পাবনাপাড়া মহল্লার চিত্র এটি। চিকিৎসকরা বলেছেন, এটি ভাইরাসজনিত রোগ হলেও বাহ্যিকভাবে চর্মরোগ বলে মনে হচ্ছে।
জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে পাবনাপাড়া মহল্লার সুলতানের স্ত্রী লিমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘামাচির মতো বের হয়। পরে খুব চুলকানোর কারণে লাল হয়ে যায়। তার তিনদিন পরে তার মেয়ের শরীরেও ওই লক্ষণ দেখা দেয়। তারা প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন। কিন্তু চুলকানি আরো বেশি হতে থাকেলে একপর্যায় নাটোর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দেখান। তার পরামর্শে ওষুধ সেবন করলেও কোনো কাজ হয়নি। লিমার পরে তার মেয়ে এবং তার পরে প্রতিবেশীদের শরীরেও দেখা দেয় এ রোগের লক্ষণ।
ধীরে ধীরে ভাইরাসজনিত এই রোগটি ছড়িয়ে পড়ে মহল্লাব্যাপী। বর্তমানে, এ মহল্লায় নারী-পুরুষ শিশুসহ প্রায় ৬০ জন আক্রান্ত। আক্রান্ত রোগীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘামাচির মতো লাল হয়ে গুঁটি গুঁটি হয়ে পড়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রত্যেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেছেন কিন্তু রোগ উপশম হয়নি। এমনকি রোগটি সঠিকভাবে নির্ণয়ও করতে পারেননি কেউ।
আক্রান্ত লিমা জানান, দেড় বছর আগে হঠাৎ করেই তার শরীরে ঘামাচির মতো বের হয়ে চুলাকানো শুরু করে। চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলেছেন এটি চর্ম রোগ। ওষুধ সেবনের পরেও কোনো কাজ হয়নি। পরবর্তীতে চর্ম ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সাতজন ডাক্তার দেখিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাননি। এমনিক এ রোগের নাম কি তাও কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেননি।
আক্রান্ত হাজেরা, রিমা, সুলতান, মেহেদীসহ প্রায় ১৫ জন বলেন, দিন রাত ২৪ ঘণ্টা শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকায়। এমনকি আক্রান্ত স্থানে চুলকানোর কারণে রক্ত বের হয়। ফুলে লাল হয়ে যায়। অনেক ওষুধ খেয়েছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। সরকারিভাবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখলে মনে হয় ভালো হতে পারে বলেও জানান তারা।
আক্রান্ত শিশু সুয়াইবার মা বলেন, আমার ছোট্ট শিশু চুলকাতে না পেরে চিৎকার করে। শিশু বিশেষজ্ঞ, চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কিছুই হয়নি। শিশু সন্তান নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আক্রান্ত রোগীরা কখনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেননি। তাদেরকে হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আক্রান্ত রোগী ও আক্রান্তের স্থান পরীক্ষা নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
Discussion about this post