হার্টবিট ডেস্ক
প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে সবচেয়ে বেশি যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার হয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, প্রাইমারি লেবেলে যারা স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন, বিশেষ করে গ্রাম্য ডাক্তার যারা রয়েছেন, তারা কোয়ালিফাইড না। তাদের কোনো সার্টিফিকেট বা যোগ্যতা নেই, অথচ তারা অ্যান্টিবায়োটিকও প্রেসক্রাইব করে। এটি এখন থেকে আর হতে দেওয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা গ্রামে চিকিৎসা দেয়, তাদের চিকিৎসা দেওয়ার মতো কোনো শিক্ষা, যোগ্যতা বা সার্টিফিকেট নেই। তাদেরকে আমরা চিকিৎসা দিতে দেব না। এ বিষয়ে আমরা খুব শিগগিরই পদক্ষেপ গ্রহণ করব। এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে চেষ্টা করছি। সেদিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। সেবার মানোন্নয়নে অনেকগুলো দিক আছে। এ ক্ষেত্রে অনেক জনবল প্রয়োজন হয়, অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়। আমরা এখন প্রাইমারির স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। যদি প্রাইমারির স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করতে পারি, তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যখাতের সার্বিক চিত্র অনেকটাই পাল্টে যাবে।
জাহিদ মালেক বলেন, প্রাইমারি হেলথ কেয়ার মূলত কমিউনিটি ক্লিনিক ও ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে দিয়ে থাকি। সেখানে আমাদের ১০ বেড হাসপাতাল আছে, ইউনিয়ন হেলথ সেন্টার আছে, এছাড়াও ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে যারা এই স্বাস্থ্য সেবাটা দিয়ে থাকে। আমরা এ ক্ষেত্রে একটি বিষয়ে বেশি জোর দিচ্ছি, তা হলো প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টারে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাইমারি স্বাস্থ্যসেবায় যা যা দেওয়া দরকার তামরা নির্ধারণ করে দেব। আমরা এখন স্কুল হেলথের ওপর জোর দিচ্ছি, যাতে করে ছেলে মেয়েরা স্বাস্থ্যসেবা সম্বন্ধে জানে, তাদের খাদ্যাভ্যাস সম্বন্ধে জানে, মাদক থেকে তারা যেন দূরে থাকে, এসব বিষয়ে তাদেরকে ধারণা দেওয়া হবে।
অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে যেগুলো অবৈধ, নিবন্ধিত নয়। তাদের কাছে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। ইতোমধ্যে অসংখ্য ডায়াগনস্টিক ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছি। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
করোনা নিয়ন্ত্রণের সফলতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা করোনার প্রায় তিন বছর কাটিয়েছি। এই পুরো সময়টাই করোনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ভালো করেছি এবং করোনা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি। করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা পৃথিবীতে প্রথম স্থান, এশিয়াতে প্রথম স্থান অধিকার করেছি। আমরা ভ্যাকসিনেশনেও অত্যন্ত ভাল করেছি।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, দেশে এ পর্যন্ত আমরা ৩১ কোটি ভ্যাকসিন দিয়েছি। এই চলমান টিকা ক্যাম্পেইনে প্রায় সোয়া কোটি ভ্যাক্সিন দিয়েছি। আশা করি আগামী তিন দিনে দেড় কোটি ডোজ টিকা আমরা দিতে পারব। এটাই কোনো ক্যাম্পেইনে সর্বোচ্চ ভ্যাকসিনেশন। আশা করি আমাদের কোনো ভ্যাকসিন এক্সপায়ার্ড (মেয়াদোত্তীর্ণ) হবে না। যদিও এটি নিয়ে আমাদের আশঙ্কা ছিল, মানুষ স্বপ্রণোদিত হয়ে টিকা নিতে আশায় সেই আশঙ্কা থেকে আমরা মুক্ত হয়েছি।
Discussion about this post