ডা. শরমীন সোহেলী
ইউভিয়া (চোখের মধ্য স্তর) এবং তার চারপাশের টিস্যুগুলির স্ফীতি বা প্রদাহকে ইউভাইটিস বলে। রোগীর একটি অথবা উভয় চোখই এতে আক্রান্ত হতে পারে। সময়মত চিকিৎসা না করলে এর ফলে অন্ধত্ব ঘটতে পারে।
ইউভিয়ার কোন অঞ্চলটি আক্রান্ত হয়েছে তার ভিত্তিতে এটি তিন প্রকারের হতে পারে সম্মুখস্থ (এন্টেরিয়র), মধ্যস্থ (ইন্টারমিডিয়েট) এবং পশ্চাদস্থ (পোস্টেরিয়র)। কিছু ক্ষেত্রে, তিনটি স্তরই একসাথে আক্রান্ত হতে পারে। এটি আকস্মিক এবং ক্ষণস্থায়ী (একিউট) হতে পারে অথবা দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) বা বেশি সময়ের জন্য থাকতে পারে।
লক্ষণ
♦ চোখে কম দেখা
♦ চোখে ঝাপসা দেখা
♦ চোখের সামনে কালো বিন্দু ভেসে বেড়াতে দেখা
♦ আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বা ফটোফোবিয়া
♦ চোখে ব্যথা করা এবং লাল হয়ে যাওয়া
♦ মাথায় যন্ত্রণা
♦ তারারন্ধ্র ছোট হয়ে যাওয়া
♦ চোখের তারার রং পরিবর্তন হওয়া
♦ চোখ দিয়ে পানি পড়া
কারণ
ইউভাইটিস রোগের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। সাধারণত অটোইমিউন রোগের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি দেখতে পাওয়া যায়, যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রোগীর চোখসহ বিভিন্ন টিস্যুর ওপর আক্রমণ করে। এই রোগের কারণগুলো হচ্ছে : আলসারেটিভ কোলাইটিস, এইচআইভি সংক্রমণ, হারপিস, লাইম ডিজিজ, সিফিলিস, টিউবারকিউলোসিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস, চোখের তীব্র আঘাত লাগলে, কোনো বিষাক্ত দ্রব্য চোখে ঢুকে যাওয়া এবং ধূমপান।
রোগ নির্ণয়
এই রোগটি নির্ণয় করার জন্য চিকিৎসক রোগীর চোখ পরিষ্কার না ঝাপসা—সেটি পর্যবেক্ষণ করেন। এ ছাড়া কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়ে থাকে, যেমন :
♦ সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা ও প্রোটিনের মাত্রা নির্ণয়
♦ পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার ইতিহাস সংগ্রহ করা
♦ ত্বকের পরীক্ষা
♦ চোখের ভেতরে উপস্থিত তরলের পরীক্ষা
চিকিৎসা
♦ প্রদাহ কমাতে কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ প্রয়োগ
♦ তারারন্ধ্র প্রসারণে সাহায্য করতে মাইড্রিয়াটিক চোখের ড্রপ
♦ সংক্রমণের ক্ষেত্রে, অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার
♦ গাঢ় রঙের চশমা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতায় সাহায্য করতে পারে
♦ অতি সত্বর চোখের ডাক্তারের কাছে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. শরমীন সোহেলী
সিনিয়র কনসালট্যান্ট
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ঢাকা
Discussion about this post