হার্টবিট ডেস্ক
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করে। এদের মধ্যে প্রায় ৪ লাখই হয় অপরিণত শিশু। অপরিণত শিশুর রেটিনা স্বাভাবিকভাবেই অপরিণত থাকে। শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে সেই রেটিনা ধীরে ধীরে পরিপূর্ণতা পায়। ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে দেখা দেয় নানা সমস্যা। শতকরা এই ৩০ ভাগ শিশুকে খুঁজে বের করতে দরকার চক্ষু বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা (স্ক্রিনিং)। এই রোগের চিকিৎসা আছে। লেজার করা হয়, চোখের ভেতর ইনজেকশনও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে যদি এই রোগ ধরা যায়, তাহলে শিশুর দৃষ্টি রক্ষা করা সম্ভব।
আজ রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে বিশ্ব রেটিনা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত এক উন্মুক্ত আলোচনা ও সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘রেটিনা সম্বন্ধে জানুন, দৃষ্টি সুরক্ষিত রাখুন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশে প্রথমবারের মতো বিশ্ব রেটিনা দিবস পালিত হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করে। এদের মধ্যে প্রায় চার লাখ অপরিণত। অপরিণত শিশুর রেটিনা স্বাভাবিকভাবেই অপরিণত থাকে। শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে সেই রেটিনা ধীরে ধীরে পরিপূর্ণতা পায়। ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে দেখা দেয় নানা সমস্যা। শতকরা এই ৩০ ভাগ শিশুকে খুঁজে বের করতে দরকার চক্ষু বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা (স্ক্রিনিং)। এই রোগের চিকিৎসা আছে। লেজার করা হয়, চোখের ভেতর ইনজেকশনও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে যদি এই রোগ ধরা যায়, তাহলে শিশুর দৃষ্টি রক্ষা করা সম্ভব। রেটিনায় রোগ প্রতিরোধ করার জন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে বছরে একবার রেটিনা পরীক্ষা করাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে, একই সঙ্গে বছরে একবার রেটিনা পরীক্ষা করাতে হবে। বয়স ৬০ এর ওপরে হলে বছরে একবার ম্যাকুলা বিষয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। অপরিণত শিশু জন্মগ্রহণ করলে অবশ্যই সঠিক সময়ে চোখ পরীক্ষা করাতে হবে।
সেমিনারে বলা হয়, চোখের ভেতরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেটিনা। বিভিন্ন রকম শারীরিক ও চোখের সমস্যায় রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে একজন ব্যক্তি আজীবনের জন্য অন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমাদের দেশে রেটিনার সমস্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এ নিয়ে মানুষের সচেতনতা কম। নানা রকম শারীরিক রোগ ও চোখের সমস্যায় রেটিনা আক্রান্ত হয়। ফলে একজন ব্যক্তি একেবারেই অন্ধ হয়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস আমাদের দেশে এখন মহামারি রূপে আর্বিভূত হয়েছে। ডায়াবেটিস চোখের সব অংশেরই তুলনায় রেটিনায় বেশি ক্ষতি করে।
এক সমীক্ষায় দেখা যায়, অন্ধত্বের সামগ্রিক কারণের মধ্যে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথীর জন্য অন্ধত্ব বরণ করে শতকরা ১২ দশমিক ৫ ভাগ। ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী এই একই সমস্যায় ভুগতে পারেন। সমীক্ষায় দেখা যায়, ১৫ বৎসর বা আরও অধিককাল ধরে যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের ভেতরে প্রায় ২ শতাংশ মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। আরও ১০ শতাংশের দৃষ্টিশক্তির গুরুতর অবনতি ঘটে। ডায়াবেটিস যাদের আছে তাদের উচ্চ রক্তচাপ থাকা খুবই স্বাভাবিক। এই রোগে চোখের রেটিনার নানা সমস্যা হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা না হলে, এখান থেকেও অন্ধত্ব হতে পারে। রেটিনোপ্যাথী অব প্রিম্যাচিউরিটি বা অপরিণত শিশুর রেটিনার রোগ। এটি নতুন সমস্যা আমাদের দেশে। বর্তমানে আমাদের দেশে অপরিণত শিশুদের যত্ম নেওয়ার বিশেষ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সক্ষমতা বেড়েছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির মহাসচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারিক রেজা আলী। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ভিট্রিও -রেটিনা সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. জিয়াউল আহসান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা ও গবেষণা) অধ্যাপক মো. জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাকাডেমি অফ অফথালমোলজির সভাপতি (ইলেক্ট) অধ্যাপক আভা হোসেন এবং বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ সাঈদ।
সংগঠনের সহ-সভাপতি বিএসএমএমইউ’র চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইউভিয়া সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, গ্লোকোমা সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক হাসান শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ক্যাটারেক্ট এন্ড রিফ্রাকটিভ সার্জনস’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাফর খালেদ ও বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি অফ অফথালমোলজির অনারারি সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মো. শওকত কবীর।
Discussion about this post