হার্টবিট ডেস্ক
উদ্বোধন হলো বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউর ‘সুপার স্পেশালাইজড’ হাসপাতাল। আজ বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এর উদ্বোধন করেন।
এর ফলে সমন্বিত ব্যবস্থার মাধ্যমে এক ভবনে জটিল রোগীদের সকল স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান মিলবে এই ‘সুপার স্পেশালাইজড’ হাসপাতালে।
৭৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালের প্রতি ওয়ার্ডে আছে ৮টি করে শয্যা। বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার রোগীকে সেবা দেওয়া হবে। এতে খরচ কমার পাশাপাশি অবসান হবে জটিল রোগীদের ভোগান্তিরও।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের সকল হাসপাতালে যেকোনো ব্যক্তি সরাসরি বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগে চিকিৎসা নিতে পারেন। তবে এ হাসপাতালে সবার চিকিৎসা মিললেও কেবল অন্য হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকের পাঠানো সুপারিশের ভিত্তিতেই রোগী ভর্তি করা হবে।
বিভিন্ন বিভাগ, ডিসিপ্লিন নিয়ে বিশ্বমানের পাঁচটি বিশেষায়িত সেন্টারের মাধ্যমে হাসপাতালটিতে রয়েছে সকল রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অস্ত্রোপচার সুবিধা। ফলে চিকিৎসাধীন রোগীদের যে কোনো সমস্যায় অন্য হাসপাতালে যেতে হবে না।
বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, রোবটিক অপারেশন ও জিন থিরাপিসহ বিভিন্ন সেবার জন্য আছে আন্তর্জাতিক মানের ১০টি অপারেশন থিয়েটার। রয়েছে ১০০ শয্যার আইসিইউ, অত্যাধুনিক প্রায় একশ’ ভিআইপি কেবিন। আর সাধারণ রোগীদের জন্য আছে ৫৪০টি শয্যা।
বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিতে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়োজিত আছেন প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও জনবল। বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি দুই বছরের জন্য ৫৬ জন কোরীয় কনসালট্যান্ট কাজ করবেন। সেবা দেওয়ার সঙ্গে দেশীয় জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখবেন তাঁরা।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের অর্থায়নে নির্মিত এই হাসপাতালের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার পাঁচশ’ ৬১ কোটি ১৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে কোরিয়া ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১ হাজার সাত চল্লিশ কোটি ৩৩ লাখ চুরাশি হাজার টাকা, বাকি টাকা বাংলাদেশের। ৪০ বছর মেয়াদি এ ঋণের প্রথম ১৫ বছর কোনো টাকা কোরিয়াকে দিতে হবে না। ১৬তম বছর থেকে পরবর্তী ২৫ বছরে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ হারে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
দেশের প্রথম বিশ্বমানের এই বিশেষায়িত হাসপাতালে নিশ্চিত করা হয়েছে গতিশীল স্বাস্থ্যসেবার সকল ব্যবস্থা।
নিউমেটিক টিউব সিস্টেম
ল্যাবরেটরির কাজ গতিশীল ও নির্বিঘ্ন রাখতে একতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত রয়েছে ২১টি নিউমেটিক স্টেশন। অত্যাধুনিক এই নিউমেটিক টিউব সিস্টেমে দ্রুততম সময়ে একতলা থেকে আরেকতলায় রক্ত ও স্যাম্পলসহ প্যাথলজিক্যাল নানা বস্তু অনায়াসে আদান-প্রদান করা যায়।
পেপারলেস হাসপাতাল
চিকিৎসা সেবার অত্যাধুনিক সুবিধাসম্বলিত এ হাসপাতালটি সম্পূর্ণ পেপারলেস। রোগীদের যে কোনো তথ্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাপসের মাধ্যমে সংরক্ষণ ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে খরচসহ রোগীর যে কোনো তথ্য এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে ডিজিটালই স্থানান্তর হয়ে যাবে।
নার্স কলিং সিস্টেম
জরুরি পরিস্থিতিতে একজন নার্সকে ডাকার সুবিধার্থে প্রতিটি শয্যার পাশে রয়েছে একটি করে সুইচ। এখানে প্রেস করার সঙ্গে সঙ্গে বার্তা চলে যায় নার্স স্টেশনে। প্রতিতলায় থাকা নার্স সেন্টার থেকে মুহূর্তেই সংশ্লিষ্ট রোগীর কাছে চলে আসেন একজন নার্স এবং গ্রহণ করেন প্রয়োজনীয় চিকিৎসার কার্যকর উদ্যোগ।
ওয়াশরুমে ফোনের ব্যবস্থা
এ ছাড়াও রোগীদের জন্য নির্ধারিত ওয়াশরুমে আছে জরুরিভিত্তিতে ফোনের ব্যবস্থা। যে কোনো স্বাস্থ্য সংকটে সাহায্য চাওয়ার সুবিধার্থে চব্বিশ ঘণ্টাই এ সেবা অব্যাহত থাকে।
১৩তলাবিশিষ্ট এ হাসপাতালের বেজমেন্টে ওয়ানে রয়েছে অত্যাধুনিক কিচেন ও মনোরম ক্যান্টিন ব্যবস্থা। বেজমেন্ট দুইয়ে আছে গাড়ি পার্কিং ও ওয়াশিং ব্যবস্থাপনা।
Discussion about this post