হার্টবিট ডেস্ক
আজ রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ব্লক মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যে কোনো ব্যথাই মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সঠিকভাবে পরীক্ষা না করে রাতে পেটে ব্যথা হলে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে শুয়ে থাকলে মৃত্যুও হতে পারে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যে কোন ব্যথাই মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সঠিকভাবে পরীক্ষা না করে রাতে পেটে ব্যথা হলে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে শুয়ে থাকলে মৃত্যুও হতে পারে। ভোর রাতের ব্যথা মারাত্মক আকার ধারণ করে। মনে রাখতে হবে, ভোর রাতেই ব্যথার মৃত্যুর হার বেশী। তাই পেটে ব্যথাকে অবহেলা না করে নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে যথাযথ সেবা নিতে হবে। অনেক কারণেই পেটে ব্যথা হতে পারে। তাই পেটের ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথাভেবে ওষুধ খাওয়া ঠিক না।
বিএসএমএমইউ ভিসি বলেন, আমরা খুব তাড়াতাড়ি ২৫ জন চিকিৎসককে পিএইচডি কোর্সে ইনরোলমেন্ট করতে যাচ্ছি। বিভাগের ফ্যাকাল্টির পাশাপাশি রেসিডেন্টদেরকে গবেষণায় আগ্রহী করতে আমাদের অনেক উদ্যোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের স্বপ্নের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন করবেন। এ হাসাপাতাল চালু হলে স্বাস্থ্যখাতে আরেকটি নব দিগন্ত সূচনা হবে।
সেমিনারে বলা হয়, পেটের রোগের অন্যতম হচ্ছে পেটে ব্যথা। প্রতিদির এই পেটের ব্যথা নিয়ে আমাদের হাসপাতালে অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। যার অধিকাংশ কারণ নির্ণয় করা গেলেও প্রায় ৩০ শতাংশ কারণ নির্ণয় করা যায় না। পেটে ব্যথার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে পেপটিক আলসার ডিজিজ, অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ, আইবিএস, পিত্তথলীর প্রদাহ, পিত্তথলী ও পিত্তনালীর ভিতর পাথর, লিভারের প্রদাহ (হেপাটাইটিস) ইত্যাদি।
কিছু ক্ষেত্রে, পেটে ব্যথা আমাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। যেমন পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কোলন, পিত্তথলীর ক্যান্সার। রোগীর ইতিহাস, শারীরিক ও ল্যাবরেটোরি পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা সঠিক সময়ের ভিতর পেটে ব্যথার কারণ সম্পর্কে অবগত হতে পারি। কিছু ক্ষেত্রে বুকের ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, এন্ডোসকপি, কোলনস্কপি পরীক্ষাগুলো করা বিশেষ প্রয়োজন হয়। শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের উপসর্গ হিসেবে পেটে ব্যথার অন্যতম যা অনেকাংশই অনির্ণীত থাকে, যেমন হার্টের রোগ। বয়স্ক রোগী, মহিলা ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগীরা এ সমস্যায় বেশী ভোগেন। পেটে ব্যথা উপসর্গ নিয়ে অনেকে চিকিৎসকের কাছে আসেন। এসব উপসর্গের মধ্যে এপেন্ডিসাইটিস, পিত্তথলির পাথর, অন্ত্র ফুটো হয়ে যাওয়া, অন্ত্রে প্যাচ লেগে যাওয়া, নারীদের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়ের নালীতে প্যাচ লেগে যাওয়া অন্যতম। যদি কোন রোগীর পেটে ব্যথা সাধারণ ওষুধে না কমে এবং ৬ ঘণ্টার বেশী সময় ধরে থাকে তাহলে দেরী না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে অথবা কোন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে। সুতরাং পেটে ব্যথাকে অবহেলা আর নয়। পেটে ব্যথা হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিকটস্থ চিকিৎসকের শরাণপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা করলে এই উপসর্গ থেকে দীর্ঘ মেয়াদী পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
সেমিনারে কি-নোট স্পিকার হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রোকুনুজ্জামান, সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এস.এম. সাঈদ উল আলম, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফজলুল করিম চৌধুরী।
সেমিানের তিনটি প্রবন্ধের উপর বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন বিএসএমএমইউর প্রো- ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।
সেমিনারটিতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সাব কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সাব কমিটির সদস্য সচিব নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ (সবুজ) ও রেসপাইরেটোরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম।
Discussion about this post