মাহ্ফুজা নাসরীন শম্পা
টেস্টিং সল্টসমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে খেলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যেমন মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, ঝিমুনি ভাব, শরীরে লাল লাল র্যাশ ওঠা, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। এ ছাড়া টেস্টিং সল্টের গ্লুটামিক অ্যাসিড আমাদের দেহের জন্য একটি অপ্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। এটি দেহে নিজে থেকেই তৈরি হয়। ফলে আমরা যখন বেশি পরিমাণে টেস্টিং সল্ট দেওয়া খাবার খাই, তখন রক্তে এই গ্লুটামিক অ্যাসিড বেড়ে যায়।
এটি রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কে গিয়ে স্নায়ুতন্ত্রকে উত্তেজিত করে। এর ফলে অস্থিরতা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
আমাদের দেশে বেশির ভাগ শিশু প্রতিদিন চিপস খেয়ে থাকে। একটু লক্ষ করলেই চিপসপ্রিয় শিশুদের মধ্যে এই লক্ষণগুলো দেখা যাবে। এ ছাড়া মারাত্মক বিষয় হচ্ছে, যদি কোনো গর্ভবতী মা অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টিং সল্টসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে তাঁর গর্ভের সন্তান মানসিক সমস্যা নিয়ে জন্মাতে পারে। কারণ টেস্টিং সল্টের গ্লুটামেট মস্তিষ্কের নিউরনে বিভিন্নভাবে আঘাত করে এর স্বাভাবিকতা নষ্ট করে দেয়।
টেস্টিং সল্ট আমাদের জিহ্বার স্বাদগ্রন্থিকে উত্তেজিত করে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে। ফলে যারা টেস্টিং সল্টসমৃদ্ধ খাবার খেয়ে থাকে, তাদের অন্য কোনো খাবার ভালো লাগে না। তারা ধীরে ধীরে ফাস্টফুড, চায়নিজ ফুড, চিপস, চিকেন ফ্রাইয়ের মতো উচ্চ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে তাদের মধ্যে দেখা দেয় স্থূলতা।
অনেকে টেস্টিং সল্টের ভয়াবহতা না জেনে বাসায় তৈরি করা খাবারেও সেটি ব্যবহার করে থাকেন, যা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলে পরিবারের সবাইকে। তাই স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টিকারী টেস্টিং সল্টসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া থেকে শিশু, গর্ভবতীসহ সবাইকে বিরত থাকতে হবে।
লেখক: পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল।
Discussion about this post