হার্টবিট ডেস্ক
প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষকে বাঁচাতে ওষুধের অনুমোদন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থাটি জানিয়েছে, গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে-দুটি মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে কার্যকর। একটি পদ্ধতিগত পর্যালোচনা এবং মানুষের ওপরে রোগ নিরাময়ের নানা পরীক্ষামূলক বিশ্লেষণ করার পরে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
ডব্লিউিএইচও’র ক্লিনিকাল কেয়ার (চিকিৎসা পরিষেবা) দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জ্যানেট ডিয়াজ। এ বিজ্ঞানী বলেন, মানুষের উপরে দুটি পরীক্ষামূলক গবেষণা চালানোর পরে যে শক্ত প্রমাণ মিলেছে, তার উপরে ভিত্তি করে ওই সুপারিশগুলো করা হয়েছে। ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে সবচেয়ে বড় পরীক্ষামূলক কাজটি করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ইবোলা প্রাদুর্ভাবের সময় এই পরীক্ষাগুলো পরিচালনা করা হয়েছিল এটাই দেখার জন্য যে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও মান নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষাগুলো করা যেতে পারে।
সংমিশ্রিত এই নির্দেশিকাটি প্রমাণ দিচ্ছে যে, mAb114 এবং Regeneron-EB3- মৃত্যুর হারকে হ্রাস করে। তূলনামুলকভাবে প্রায় ৬০ শতাংশ ঝুঁকি হ্রাস করতো। যাতে প্রতি এক হাজার রোগীর মধ্যে ২৩০ থেকে ৪০০ জনের জীবন বাঁচানো যায়।
ডিয়াজ মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি থেরাপিউটিক্সের বিকাশকে একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে অভিহিত করেছেন। তবে, তিনি উল্লেখ করেন যে কেবলমাত্র ওষুধই সমাধান নয়। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে একটি বিস্তৃত চিকিৎসাদানের পাশাপাশি হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রেই এর চিকিৎসা দেয়া উচিত।
ডিয়াজ বলেছেন যে দুটি প্রস্তাবিত চিকিৎসার সুপারিশ করা হয়েছে তা সব বয়সের মানুষের জন্য সুস্পষ্ট ভাবেই উপকারী।
তিনি বলেন, নিশ্চিতভাবে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত সমস্ত রোগীর উপরে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি বলেন, বয়স্ক, গর্ভবতী ও বুকের দুধ খাওয়ানো নারী, শিশু এবং জন্মের পর প্রথম সাত দিনের মধ্যে নিশ্চিত ইবোলা আক্রান্ত মায়েদের গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভাইরাস জাতীয় ইবোলা জ্বর ছড়ায় ইবোলায় আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত বা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এমন রোগীর শরীরের তরল পদার্থের মাধ্যমে। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকায় সবচেয়ে ভয়াবহ ইবোলার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। ওই প্রাদুর্ভাবে প্রায় ২৯ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে ১১ হাজার ৩০০ এরও বেশি লোক মারা যায়।
Discussion about this post